বাংলা চলচিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তী মিয়া ভাই খ্যাত চিত্র নায়ক ফারুক ওরফে আকবর হোসেন পাঠানের বাড়ির উঠোনে শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলা। ’৭১এ মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণসোম গ্রামের কালের সাক্ষী পাঠান বাড়ির উঠোনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ মিলন মেলায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাগণ অংশ নিয়ে নানা স্মৃতিচারণ করেন।

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণসোম গ্রামের পাঠান বাড়িতে জন্ম নিয়ে বেড়ে উঠেন চিত্র নায়ক ফারুক। তার আসল নাম আকবর হোসেন পাঠান। লড়াকু স্বভাবের এই চলচ্চিত্র শিল্পী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সারির একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে নানা অবদানের জন্য আলোচিত ছিল এই পাঠান বাড়ি। যুদ্ধকালীন সময়ে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের এই বাড়ীতে এনে আশ্রয় দিয়ে সেবা দিতেন তার বাবা ডাঃ আজগর হোসেন পাঠান।

শনিবার দিনব্যাপী মুক্তিযোদ্ধাদের এ অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করেন সাবেক সংসদ সদস্য ও গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ডাকসু’র সাবেক ভিপি আক্তারুজ্জামান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা কে বি এম মফিজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মনির উদ্দিন আহমেদ, মো. মোস্তফা মিয়া, রেজাউল করিম হুমায়ুন, মানজাত আলী, হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।

মুক্তিযোদ্ধাদের পূনর্মিলনী অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ হোসেন পাঠানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন দূর্নীতি দমন কমিশনের (দূদক) সাবেক মহা পরিচালক শহিদুজ্জামান সরকার, তুমলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুবকর মিয়া বাক্কু, তিতুমীর সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি কামাল উদ্দিন আহমেদ।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে নানা অবদানের স্বাক্ষী ছিল তুমলিয়া ইউনিয়ন। সন্মুখ যুদ্ধে প্রায় দেড়শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা অংশ নিয়েছিলেন এই ইউনিয়ন থেকে। বর্তমানে তাদের মধ্যে জীবিত রয়েছেন ৮৫ জন। তাদেরই অংশগ্রহনেই শনিবার অনুষ্ঠিত মিলন মেলার পুরো অনুষ্ঠান ছিল মুখরিত।

এছাড়াও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের লোমহর্ষক নানা স্মৃতিচারণ মাতিয়ে রেখেছিলেন পুরো অনুষ্ঠান প্রাঙ্গন। সকালে অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন আর শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানাতে ১ মিনিট নিরতা পালনের মধ্যে দিয়ে। পরে বিকেলে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সহ দেশের নানা গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের সংগীত শিল্পীরা ।