গাজীপুরে শনিবার দুপুরে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীদের প্রতিবাদ মিছিলে বাধা দেওয়ায় তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়েছে। এসময় ইটের আঘাতে এসআই সহ পুলিশের তিন সদস্য আহত ও পুলিশের পিকআপ ভাংচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩৯ রাউন্ড সর্ট গানের গুলি ও টিয়ার সেল ছুড়েছে। ঘটনাস্থল থেকে যুবদল নেতাসহ ৩জনকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃতরা হলো- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সদর থানার সাহাপাড়া এলাকার মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে যুবদল নেতা মোঃ মাসুদ মোল্লা (৩৯), একই জেলার জয়দেবপুর থানার পাইনশাইল এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে জুবায়ের হোসেন (১৯) ও কালীগঞ্জ থানার দুর্বাটি এলাকার শাহজাহান আকন্দের ছেলে মোঃ শামীম (৪০)।

পুলিশ, বিক্ষোভকারী ও স্থানীয়রা জানান, মহান স্বাধীনতা দিবসে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনকালে ঢাকা, চট্রগাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে এবং দায়ীদের শাস্তির দাবীতে শনিবার দুপুরে শহরের রাজবাড়ি রোডের গাজীপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করে গাজীপুর মহানগর যুবদল, সেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। দুপুর ১টার জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাসিবুর রহমান মুন্না ও সদর মেট্রো থানা ছাত্রদলের আহবায়ক ইমরান হোসেন আরিফের নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা শহরের রেল গেইট কলাপট্টি হতে একটি মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে এসে জড়ো হয়। পরে দুপুর দেড়টার দিকে দলীয় নেতা কর্মীরা একটি মিছিল বিএনপি কার্যালয় থেকে রাজবাড়ি সড়কে বের হতে চাইলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এতে মিছিলকারীরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে এবং পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ভাংচুর করে। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ করলে দু’পক্ষের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। আতংকিত হয়ে পথচারীরা দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করে এবং ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। এতে যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক আল রাজুসহ অন্ততঃ ৫জন আহত হয়। ঘটনার সময় রাজবাড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

জিএমপি’র সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, বিক্ষোভকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে দুই এসআই আরিফ ও আল আমিনসহ গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ২৭ রাউন্ড সর্টগানের গুলি ও ১২ রাউন্ড টিয়ার শেল ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে যুবদল ও ছাত্রদলের ৩ কর্মী মাসুদ মোল্লা, জুবায়ের হোসেন ও শামীমকে আটক করা হয়। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

গাজীপুর সদর মেট্রোথানা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম শামীম জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছিল। দুপুর একটার দিকে যুবদলের একটি মিছিল শহরের রেল গেইট এলাকা থেকে দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছালে বিনা উষ্কানীতে পুলিশ পিছন থেকে মিছিলে লাঠিচার্জ করে। এক পর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের বেধড়ক লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে মহানগর যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক আল রাজুর অবস্থা গুরুতর।