ক্ষমতায় বসার পর থেকে নানান অভিযোগে সমালোচনার জন্ম দিচ্ছেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কায়েদ। এবারে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ঐ ইউনিয়ন পরিষদের দুই সদস্য।

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিন। এর আগে গত রোববার (৪ এপ্রিল) আশরাফুল আলম ও তহিদুল ইসলাম নামে দুই ইউপি সদস্য ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক সভা না করাসহ সুনির্দিষ্ট ৮টি অভিযোগ উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করেন।

তবে চেয়ারম্যানের দাবি, তার কাছে ঝামেলা মনে হওয়ায় তিনি মাসিক সভা করেন না।

প্রাপ্ত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কায়েদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদ সচিবকে সঙ্গে নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরে টিআর, কাবিখা, এডিপি, এলজিএসপি, নন- ওয়াজে প্রকল্প গুলোতে নিজেই প্রকল্প চেয়ারম্যান হয়ে নামমাত্র কাজ করে ভুয়া বিল ভাউচার জমা দিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেন। সরকারী সোলার প্যানেল বিতরণসহ বিভিন্ন সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে বসতবাড়ীর কর বাবদ দুইশত টাকা করে আদায় করে তা নিজেই আত্মসাৎ করেন। নানা অজুহাতে বসত বাড়ির কর আদায় করলে তা উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় না করে ইউপি সচিবসহ ভাগাভাগি করে আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কয়েদ। ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, বিধবা, শিশু ভাতাসহ বিভিন্ন সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরিতে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় না করে নিজের মত তালিকা তৈরি করে উপজেলা প্রশাসনের নিকট জমা দিয়ে আসছেন। প্রতিমাসে মাসিক সভা করে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করার নিয়ম থাকলেও তিনি কখনোই মাসিক সভা করেন না। কৃষি বিভাগ থেকে বীজ-সার বিতরণ ও জনস্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নলকূপ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। যার সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কায়েদ নিজেই জড়িত। বিভিন্ন সময় এসব বিষয়ে তথ্যের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা সচিবের কাছে গেলে সচিবও তথ্য দিতে টালবাহানা করেন।

অভিযোগকারী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আশরাফুল আলম ও তহিদুল ইসলাম জানান, আমরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিবের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে নানা সময় আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। আমরা অনেকটা বাধ্য হয়ে আমাদের অধিকার পেতে ও দুর্নীতি বন্ধের জন্য লিখিত অভিযোগ করেছি।

তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে ডাউয়ারাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কায়েদ বলেন, আমি সবসময় সবার সঙ্গে কথা বলে সবকিছু করার চেষ্টা করি। এর মাঝে দুই-তিনজন সদস্য বিভিন্ন সময় আমার বিরুদ্ধে নানা যড়ষন্ত্র করেন। আমার বিরুদ্ধে তারা যেসব অভিযোগ তুলেছেন তা ষড়যন্ত্রমুুলক, মিথ্যা ও বানোয়াট।

এবিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিউল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বেশকিছু অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে দুই ইউপি সদস্য অভিযোগ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।