গাজীপুরের টঙ্গীতে অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে এক স্কুল ছাত্রকে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে দিয়েছে অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে রবিবার গ্রেফতার করেছে টঙ্গী পশ্চিম থানার পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতের নাম মোহাম্মদ আতাউল হোসেন (৩৫)। সে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানার রামগনর গ্রামের মৃত ইমাম হোসেনের ছেলে।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মোঃ শাহ আলম জানান, সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানার ধানঘরা গ্রামের মোঃ নূর নবী সরকার স্বপরিবারে রাজধানীর তুরাগ থানার কামারপাড়া এলাকায় থাকেন। তার ছেলে ইসমাইল সরকার (১৪) স্থানীয় কামারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবীতে স্কুল ছাত্র ইসমাইল হোসেন সরকারকে অপহরণ করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে তাকে হত্যা করে লাশ তুরাগ নদীর শাখা খালে ফেলে দেয় তারা।

তিনি আরো জানান, গত ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় তুরাগ নদের শাখা টঙ্গীর আন্দারুল খালের পানিতে অজ্ঞাত এক কিশোরের লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। তার পরনে নীল রঙের জিন্স প্যান্ট এবং নীল রঙের টি শার্ট ছিল। নিহতের দুই চোখ জখমপ্রাপ্ত এবং ডান চোখ দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার আলামত ছিল। লাশটি পানিতে থাকায় শরীরের অধিকাংশ স্থান ফুলে পঁচে বিকৃত হয়ে যায়। ময়না তদন্তের জন্য লাশটি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য গাজীপুর মহানগরসহ আশপাশের জেলাগুলোতে ভিকটিমের ছবিসহ বেতার বার্তা পাঠায়। এক পর্যায়ে ডিএমপির তুরাগ থানায় গত ১৮ মার্চ দায়ের করা নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরির সুত্র ধরে ভিকটিমের পরিচয় মিলে। পরে পুলিশ ভিকটিমের বাবা-মা’র কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত আসামি আতাউল হোসেনকে গ্রেফতার করে।

জিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ জানান, গ্রেফতারকৃত আতাউল আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। স্বীকারোক্তিতে সে জানায়, সে ও তার আরো দুই সহযোগী স্কুল ছাত্র ইসমাইলের বাবার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকার মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে তাকে অপহরণ করে। অবশেষে তারা মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে রেখে যায়।