বিতর্কিত ‘শিশু বক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আবারো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। রবিবার দুপুরে গাজীপুরস্থ কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে ঢাকার তেজগাঁও থানায় নেওয়া হয়েছে। এর আগে গাজীপুরের গাছা ও বাসন থানার অপর দুইটি পৃথক মামলায় তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারগার-২ এর জেলার মোঃ আবু সায়েম জানান, ঢাকার তেজগাঁও থানায় দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করে পুলিশ। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তার ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এ মামলায় রফিকুল ইসলাম মাদানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রবিবার দুপুরে গাজীপুরস্থ কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে কড়া প্রহরায় তাকে ঢাকার তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এর আগে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা ও বাসন থানায় দায়েরকৃত পৃথক দুইটি মামলায় দুইদিনের করে রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন আদালতের সহকারি কমিশনার শুভাশীষ ধর জানান, রাষ্ট্র তথা সরকার বিরোধী ও আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থী উস্কানী ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে (২৬) গত ৭এপ্রিল ভোররাতে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানার লেটিরকান্দা এলাকার বাড়ি থেকে আটক করে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা। তিনি ওই এলাকার মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে। ওই দিন রাতেই গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়। ৮ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন র‌্যাব-১ এর নায়েব সুবেদার (ডিএডি) মোঃ আব্দুল খালেক। এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। আটককালে তার কাছ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ ‘এডাল্ট কনটেন্ট’ অশ্লীল ভিডিও চিত্রসহ পর্নোগ্রাফি পাওয়া যায়। এসব এডাল্ট ছবি ও ভিডিও তিনি নিয়মিত দেখতেন এবং সেগুলো স্টোর করতেন ও লিংক দিতেন। এজন্য রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রুজুকৃত মামলায় পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(৫)(ক) ধারা সংযোজন করা হয়।

গাছা থানার এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে গত ১৩ এপ্রিল আদালতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানীর ধার্য্য তারিখ ১৫ এপ্রিল ভার্চুয়ালী শুনানী গ্রহণ করেন আদালতের বিচারক গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শেখ নাজমুন নাহার। শুনানী শেষে তিনি রফিকুল ইসলাম মাদানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপ্রেক্ষিতে এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৮ এপ্রিল দুপুরে দুইদিনের রিমান্ডে থানায় নেয় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ২০ এপ্রিল তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।

এদিকে, গত ১১ এপ্রিল জিএমপি’র বাসন থানায় রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়। বাসন থানার এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৮ এপ্রিল ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোঃ সাখাওয়াত হোসেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক রিমান্ড শুনানীর ধার্য্য তারিখ ২১ এপ্রিল ভার্চুয়ালী শুনানী গ্রহণ করেন। শুনানী শেষে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক। এরপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২২ এপ্রিল দুপুরে তাকে কারাগার থেকে বাসন থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। দুইদিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ২৪ এপ্রিল তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।