পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়ে গেছে। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে লড়ে হেরে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। আর হেরেছেন নিজেরই এক সময়ের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। ফল ঘোষণার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। কিন্তু নন্দীগ্রাম এখনও আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। ওই আসনে একবার মমতা এগিয়েছেন তো শুভেন্দু পিছিয়েছেন। আবার কখনও উল্টোটাও ঘটেছে। তবে শেষপর্যন্ত মাত্র ১৭৬২ ভোটে জিতে গেছেন শুভেন্দু। তবে হার মানতে নারাজ মমতা। তার দাবি দল ওই আসনে ভোট পুর্নগণনা চাইছে।

যদিও সোমবার আরও গুরুতর অভিযোগ করেছেন মমতা। এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন যে, নন্দীগ্রামে ইভিএম পাল্টানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে একটি এসএমএস পড়ে শোনান মমতা। তার অভিযোগ, রিটার্নিং অফিসারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। মমতার দাবি, নন্দীগ্রামের রিটার্নিং অফিসার এটি পাঠিয়েছেন। তবে কাকে পাঠানো হয়েছে, তা জানাননি তৃণমূল সুপ্রিমো।

ওই এসএমএস পড়েও শোনান মমতা। সেখানে বলা হয়েছে, প্লিজ সেভ মি। আমার কাছে আত্মহত্যা ছাড়া বিকল্প নেই। প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমার ছোট মেয়ে রয়েছে। এরপরই মমতা অভিযোগ করে বলেন, ইভিএম পাল্টানো হয়েছে। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়েও কাজ করানোর অভিযোগ করেন মমতা।

তিনি বলেন, বুঝতে পারছেন কী হয়েছে! সব জায়গায় এক ফল। আর একটা জায়গায় হঠাৎ ৮ হাজার ভোট হয়ে গেল জিরো। ৪ ঘণ্টা সার্ভার ডাউন করে রেখে দিয়েছিল। ৪০ মিনিট লোডশেডিং করে রেখেছিল। মেশিন পাল্টেছে। অনেক কিছু করেছে। ভয়ের কী আছে? অফিসিয়ালি কেউ পুনর্গণনা চাইতে পারে। নির্বাচন কমিশন দিল না কেন? সাংঘাতিক কথা দেখেছেন। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে কাজ করানো হচ্ছে রিটার্নিং অফিসারকে।

মমতা আরও বলেন, সব সাংবাদিকরা অ্যানাউন্স করে দিলো। সব উল্টে গেল। এমন কোথাও দেখিনি। এত বড় মাফিয়াগিরি! এটার বিচার হোক। কোর্টে তো আমরা যাবই। আমাদের ছেলেমেয়েরা আন্দোলন করছে। আলাদা জায়গায় ইভিএম, ভিভিপ্যাট ও ব্যালট সরিয়ে রাখতে হবে। লিখিত দিতে হবে যাতে বিকৃত করা না হয়। বিকৃত করা হলে ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

এদিকে নির্বাচনে নিজের পরাজয়ের জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছেন মমতা। এমনকি দুজন পর্যবেক্ষক পক্ষপাতদুষ্ট ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তার ভাষায় দুজন পর্যবেক্ষক পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। তারা বলছে, মমতাকে হারাতে হবে। তারা ৫০টি আসনও পেতো না। নির্বাচন কমিশনের জন্য এতগুলো আসন পেয়েছে।