গাজীপুরের এক পোশাক কারখানায় চাঁদাবাজী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগে সিটি কর্পোরেশনের (গাসিক) ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং ওই ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহষ্পতিবার জিএমপি’র কাশিমপুর থানার এসআই দীপঙ্কর রায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতের নাম আছিম উদ্দিন (৪৫)। তিনি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন লতিফপুর এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের তেঁতুইবাড়ি এলাকার কেএসি ফ্যাশন ওয়্যার লিঃ কারখানায় চাঁদাবাজী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগে কারখানার ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ আহমেদ চৌধুরী বাদী হয়ে বুধবার বিকেলে কাশিমপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোন্তাজ উদ্দিন মন্ডল, ওই ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিরুদ্ধে আব্দুল হালিম ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহিদুল্লাহ খান, আব্দুল গনি ও আবুল কাশেমসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরো ১৫/২০জনকে আসামী করা হয়েছে। পুলিশ মামলায় অভিযুক্ত আছিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে।

কারখানার এমডি মো. ফারুক আহমেদ মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, গত প্রায় দু’বছর ধরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের স্থানীয় ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে তার লোকজন বিভিন্ন সময়ে চাঁদার দাবীতে কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা হুমকি দিয়ে আসছিল। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করেও কোন সুরাহা হয়নি। সর্বশেষ গত ২ মে কাউন্সিলর মোন্তাজ উদ্দিন মন্ডল তার লোকজন নিয়ে কারখানায় আসেন। তারা কারখানার ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মীরা বাঁধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা নিরাপত্তা কর্মী ৩জনকে মারধর করে কারখানার ভিতরে প্রবেশ করে। তারা কারখানার পরিচালকের কাছে ঈদ উপলক্ষে ৫লাখ টাকা দাবী করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে দু’পক্ষের মাঝে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এসময় শ্রমিকরা এগিয়ে এলে তারা শ্রমিকদের মারধর করে। একপর্যায়ে শ্রমিকদের ধাওয়া খেয়ে বহিরাগতরা পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা এক কর্মীর মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে আহত করে। এ ঘটনার জেরে পরদিন রাতে কারখানা থেকে বাসায় ফেরার পথে প্রোডাকশন অফিসার রোহিদুল ইসলামের পথরোধ করে বেধড়ক মারধর করে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোন্তাজ উদ্দিন ও তার লোকজন। তারা হাতুড়ি ও রড দিয়ে পিটিয়ে এবং চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ওই কর্মকর্তাকে গুরুতর আহত করে। এসব ঘটনার প্রতিবাদে শ্রমিকরা একাধিকবার সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে। চাঁদাবাজী ও মারধরের ঘটনায় কারখানার ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ আহমেদ চৌধুরী বাদী হয়ে বুধবার বিকেলে কাশিমপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

কাশিমপুর থানার ওসি মাহবুব এ খোদা বলেন, মামলার একজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে।