গাজীপুরে ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবীতে রবিবার দুইটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা পৃথকভাবে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছে। এসময় একটি কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ ও অপর কারখানার শ্রমিকরা ভাংচুর করেছে।

শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইসলাম হোসেন ও শ্রমিকরা জানান, গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন হোতাপাড়া এলাকাস্থিত পলমল গ্রুপের সাফা সোয়েটার লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরে কর্তৃপক্ষের কাছে এবারের ঈদ উপলক্ষ্যে ১০ দিন ছুটি দাবী করে আসছিল। কিন্তু শ্রমিকদের ওই দাবী না মেনে কর্তৃপক্ষ ৬দিনের ঈদের ছুটি ঘোষণা করে রবিবার। এতে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। তারা ঈদের ছুটি বাড়িয়ে ১০ দিন করার দাবীতে কর্মবিরতি শুরু করে। এসময় তারা কারখানায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।

পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, দীর্ঘক্ষণেও দাবী মেনে না নেওয়ায় আন্দোলনরত শ্রমিকরা বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কারখানা থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর গিয়ে অবস্থান নেয়। এসময় তারা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে মহাসড়কের উভয়দিকে যানবাহন আটকা পড়ে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মহাসড়কের উপর থেকে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। বৈঠকে শ্রমিকদের দাবী মেনে নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে কারখানা কর্তৃপক্ষ ঈদের ছুটি বাড়িয়ে ১০দিনের ঘোষণা দেয়। এতে শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন স্থগিত করে প্রায় পৌণে একঘন্টা পর মহাসড়কের অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ও যানবাহন চলাচল শুরু করে।

কারখানার মহাব্যবস্থাপক নুরশেদ আলম বলেন, কারখানার প্রচুর কাজের চাহিদা রয়েছে। তাই এবারের ঈদে শ্রমিকদের ৬দিনের ছুটি ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তুশ্রমিকরা এতে আপত্তি জানিয়ে ১০ দিনের ছুটি দাবি করে। পরবর্তীতে শ্রমিকদের দাবী মেনে নিয়ে ঈদের ছুটি ১০দিনের ঘোষণা দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।

এদিকে একই দাবীতে একইদিন কালিয়াকৈরের এক কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছে। উত্তেজিত শ্রমিকরা কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাংচুরও করেছে।

শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইসলাম হোসেন জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকের নিশ্চিন্তপুর এলাকার এমএস স্পিনিং মিলের শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরে কর্তৃপক্ষের কাছে ঈদ উপলক্ষ্যে ১০ দিন ছুটি দাবী করে আসছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ রবিবার দুপুরের দিকে এবারের ঈদে ৫দিনের ছুটি ঘোষণা করে। এতে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। তারা ঈদের ছুটি বাড়িয়ে ১০ দিন করার দাবীতে কর্মবিরতি শুরু করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে বিকেলে উত্তেজিত শ্রমিকরা কারখানায় হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ও দরজা জানালার কাঁচসহ বিভিন্ন মালামাল ভাংচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। বৈঠকে শ্রমিকদের দাবী মেনে নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে কারখানা কর্তৃপক্ষ ঈদের ছুটি বাড়িয়ে ১০দিনের ঘোষণা দিলে শ্রমিকরা আন্দোলন স্থগিত করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।