দরিদ্র বাবা আহেজ প্রামানিক (৭০) অভাবের তাড়নায় ছেলে আব্দুর রহিমের (৪৩) কাছ থেকে ২ হাজার টাকা ধার নিয়ে পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ছেলের নির্মম প্রহারে মারা গেছে।

শনিবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাজধানী ঢাকা থেকে ঘাতক ওই ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে । রাতেই পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিহত আহেজ আতাইকুলা থানার হরিপুর রতনপুন গ্রামের মৃত ইমারত প্রামানিকের ছেলে।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, আহেজ প্রাং অভাবের কারণে তার ছেলে আব্দুর রহিম (৪২) এর নিকট থেকে ২ হাজার টাকা ধার নেন। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) রাত ৯ টার দিকে ছেলে রহিম পিতা আহেজ প্রামানিকের নিকট ধারের টাকা ফেরৎ চান। বাবা টাকা ফেরৎ দিতে না পারায় দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছেলে রহিম বাঁশের গোড়ালি দিয়ে পিতার মাথায় সজোরে আঘাত করে। আঘাত পেয়ে বৃদ্ধ আহেজ প্রাং সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটে পড়েন। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডক্যিাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। রাজশাহী নেওয়ার পথে রাত ৩ টার দিকেই তিনি মারা যান। আতাইকুলা থানা পুলিশ ভোরে বৃদ্ধ আহেজের লাশ উদ্ধার করে। তখন থেকেই ঘাতক ছেলে রহিম পলাতক ছিল।

এ ব্যাপারে নিহতের ভাই আঃ আউয়াল বাদী হয়ে আতাইকুলা থানায় পরদিন শুক্রবার ২৩ এপ্রিল দুপুরে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রোকনুজ্জামান সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এসপি স্যারের নির্দেশনায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আতাইকুলা থানার একটি টিম ঢাকা থেকে ঘাতক ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি আরো বলেন, আসামী নিজে পিতাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজধারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে।

পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, বাবাকে হত্যা করে পুলিশকে ফাঁকি দিতে গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকায় আত্মগোপনে ছিল ঘাতক। জেলা পুলিশের কঠোর নির্দেশনায় একটি অভিযানিক টিম তাকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পিতাকে হত্যা করা একটি নজিরবিহীন ঘটনা, সবাইকে মর্মাহত করেছে। অপরাধী যেই হোক তাকে শাস্তি পেতেই হবে।