জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃত করার যে চেষ্টা হয়েছিল, তেমন কাজ এ দেশে আর কেউ করতে পারবে না বলে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশের যে উল্টোযাত্রা শুরু হয়েছিল, সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিহাস একেবারেই মুছে ফেলা হয়েছিল, পুরো পরিবর্তন। এখন একটা আত্মবিশ্বাস এসে গেছে যে বাংলাদেশের ইতিহাস আর কেউ কোনো দিন বিকৃত করতে পারবে না। আর মুছতে পারবে না।’

আজ ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪০তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৮১ সালের এদিনে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে বাংলার মাটিতে ফেরেন তিনি। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন। দেশে ফেরার আগেই (ওই বছর ফেব্রুয়ারিতে) বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। নানা প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে তিনি গত এক যুগ ধরে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

ওই দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ বলেন, ‘অনেক ঝড় মাথায় নিয়ে দেশে আসতে হয়েছিল। এই বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ, এটা স্বাধীনই থাকবে। জাতির পিতাকে হত্যার পর তখনকার সরকার অনেক বাধা দিয়েছিল যাতে আমি দেশে ফিরতে না পারি। কিন্তু সব ঝড়-ঝাপটা অতিক্রম করেই দেশে ফিরেছি এবং আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘১৭ মে ঝড় মাথায় নিয়েই দেশে এসেছিলাম। আজ একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে, এই বাংলাদেশের ইতিহাস আর কেউ কোনোদিন বিকৃত করতে বা মুছতে পারবে না।’

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছি। শুধু আমাদের দেশের ভেতরে না, বাইরেও, সব কিছু মিলিয়ে অনেক ঝড়ঝাপ্টা পার হয়েই আজকে এই জায়গায় আমরা আসতে পেরেছি। এটাই সব থেকে বড় কথা। সেই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘যাই হোক, এইটুকু বলতে পারি যে আল্লাহ সব সময় সহযোগিতা করেন এবং আল্লাহ কিছু কাজ দেন মানুষকে। সেই কাজটা যতক্ষণ শেষ না হয়, ততক্ষণ কিন্তু আল্লাহ রক্ষা করেন।’