ভারত থেকে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের নমুনা পরীক্ষা করে এ পর্যন্ত ছয়জনের দেহে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ভারতীয় ধরনটি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটি। গত এপ্রিল মাসে ভারত থেকে আসা ২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ওই ছয়জনের শরীরে ভাইরাসের ওই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত করা হয় বলে গতকাল রোববার আইইডিসিআর জানিয়েছে। করোনাভাইরাসের এ ধরনটির আনুষ্ঠানিক নাম দেওয়া হয়েছে বি.১.৬১৭। মিউটেশনের কারণে এর তিনটি ‘সাব টাইপ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে পাওয়া গেছে বি.১.৬১৭.২ ধরনটি।

ভারতে প্রথম এ মিউট্যান্ট শনাক্ত হয়েছিল বলে একে ভারতীয় ধরন বলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অন্তত ৪৪টি দেশে করোনাভাইরাসের এ ধরনটি ছড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ ধরনটিকে চিহ্নিত করেছে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ (ভিওসি) হিসেবে। নতুন এ ধরনটিই সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতকে বিপর্যস্ত অবস্থায় ফেলে দিয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। ইতিমধ্যে সেখানে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আড়াই কোটির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষের।

২১ এপ্রিল থেকে ১৬ মে পর্যন্ত ২৫ দিনে প্রতিদিনই তিন লাখের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে বাংলাদেশের প্রতিবেশী এই দেশে। আইইডিসিআর জানিয়েছে, বাংলাদেশে যাদের শরীরে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া গেছে, তারা সবাই ১ থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে ভারতের চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হরিয়ানা এবং পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছিল চিকিৎসার জন্য।

ওই ছয়জনের মধ্যে তিনজন একই পরিবারের সদস্য। তাদের বয়স ৭ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে। তারা সবাই এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশে ফেরেন। আক্রান্তদের মধ্যে যার মৃত্যু হয়েছে, তিনি ক্যান্সারসহ অন্যান্য জটিল রোগে ভুগছিলেন বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর। গত বছর দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর আইসিডিডিআরবি ও আইদেশি’র সঙ্গে যৌথভাবে প্রায় ২০০ নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছে আইইডিসিআর।

এসব নমুনার মধ্যে করোনাভাইরাসের ইউকে (বি.১.১.৭) সাউথ আফ্রিকা (বি.১.৩৫১), নাইজেরিয়া (বি.১.৫২৫) এবং ভারতীয় (বি.১.৬১৭.২) ধরন পাওয়া গেছে।