লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় যৌতুকের জন্য ববিতা খাতুনকে নির্মম নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে আঃ গণি (২৫) নামে এক পাষণ্ড স্বামীর বিরুদ্ধে। নির্যাতনের শিকার ববিতা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন আছে।

গতকাল রবিবার (২৩ মে) সকাল ৯ টার দিকে ঐ উপজেলার বাড়াইপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঐ দিন রাতে ববিতা খাতুন তার পাষণ্ড স্বামীসহ ৫ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, গত আড়াই বছর আগে উপজেলার মধ্য গড্ডিমারী এলাকার গরীব ভ্যান চালক বকুল ইসলামের মেয়ের ববিতা খাতুনের বিয়ে হয় একই উপজেলার বাড়াইপাড়া এলাকার মৃত আহের আলী মুন্সির ছেলে আঃ গনির সাথে। বিয়ের সময় অসহায় ভ্যান চালক বকুল ইসলাম অনেক কষ্ট করে তার মেয়ের শুখের জন্য তার জামাতা আঃ গনিকে দেড় লক্ষ টাকা যৌতুক হিসাবে দেয়। ঘর সংসার করা কালীন সময়ে তাদের ঘরে এক বছর বয়ের একটা ফুটফুটে ছেলে সন্তান আসে। এদিকে বিয়ের কিছুদিন পর হতে যৌতুক লোভী আঃ গনি আরও দেড় লক্ষ টাকা যৌতুক হিসাবে আনার জন্য ববিতা খাতুনকে বিভিন্ন ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। বিষয়টি ববিতা তার ভ্যান চালক বাবাকে বললে তিনি কোন টাকা দিতে পারেনি। ফলে ববিতার উপর পাষণ্ড স্বামী আঃ গনির শুরু হয় ডাং মারসহ নানান ধরনের পাষবিক নির্যাতন। এমনিভাবে প্রতিনিয়ত যৌতুকের জন্য স্বামীর নির্যাতনের শিকার হতে হয় ববিতাকে। বাবার বাড়ি থেকে দেড় লক্ষ টাকা এনে দিতে না পাড়ায় গত ৭ মাস আগে আঃ গনি উত্তেজিত হয়ে ববিতা খাতুনকে মৌখিকভাবে তালাক দেয় এবং পরে স্থানীয় মুন্সি ডেকে আবাও বিয়ের কলেমা পড়িয়ে ঘর সংসার করতে থাকে।

এমতাবস্থায় গতকাল ২৩ মে সকালে ৯ টা দিকে অসহায় ববিতাকে বাবার বাড়ি থেকে আরও দেড় লক্ষ টাকা যৌতুক হিসাবে আনতে বলে স্বামী আঃ গনি। এতে ববিতা খাতুন রাজি না হলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাসহ তার উপর চড়াও হয়ে চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে এলোপাতাড়িভাবে ডাং মার ও কিল ঘুষি মারতে থাকে। এতে ববিতা খাতুন গুরুতর আহত হয়। তাতেও ক্ষান্ত হয়নি পাষণ্ড স্বামী আঃ গনি। এরপর ববিতার চুলের মুঠি ধরে টানাহেঁচড়ার করে তার কোলের শিশুসহ বাড়ি থেকে জোড়পুর্বক বের করে দেয়। পরে আহত অবস্থায় ববিতা খাতুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন আছে। যার রেজি নং ২৩৬৪। পরে এ ঘটনায় রাতে ববিতা খাতুন বাদী হয়ে তার স্বামী আঃ গনিসহ ৫ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়।
এবিষয়ে আঃ গনির সাথে কথা হলে, তিনি যৌতুকের বিষয়টি অস্বীকার করলে ৭ মাস আগে ববিতাকে মৌখিক তালাক দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।

হাতীবান্ধা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, এবিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একজন উপপরিদর্শক এসআই কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত পুর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।