ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে গাজীপুরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ী ও চালকসহ ৫জনের হাত-পা বেঁধে গজারী বনে ফেলে ট্রাক ভর্তি গরু-মহিষ ছিনতাই করেছে আন্তঃজেলা ডাকাতদল। ছিনতাইয়ের ১২ ঘন্টার ব্যবধানে রাজধানীর দিয়াবাবাড়ি এলাকা থেকে ট্রাকসহ গরু ও মহিষ উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় আন্তঃজেলা গরু ডাকাতদলের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো-ঢাকার তুরাগ থানার দিয়াবাড়ি এলাকার মৃত হাজী আরব আলীর ছেলে আবুল কাশেম (৪৩) ও জামালপুর জেলা সদর থানার নান্দিনা গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২৫)।

পুলিশ সুপার জানান, সোমবার রাজশাহী সিটি হাট হতে ট্রাকযোগে ১৬টি গরু ও ২টি মহিষ নিয়ে মুন্সিগঞ্জ যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী রিমন হোসেন। পথে একটি গরু অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ভোর ৪টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় পৌছলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে ট্রাকটি দাঁড় করান তারা। এসময় ৭/৮জন ডাকাত একটি মাইক্রোবাস নিয়ে সেখানে আসে। ডাকাতরা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ট্রাকের আরোহী ব্যবসায়ী রিমন (২০), চালক তারিক হোসেন (৩২), হেলপার ওয়াসিম (২৭), গরুর রাখাল নুরে আলম (৪০) ও মামুনকে (২৫) মাইক্রোবাসে উঠিয়ে রাজেন্দ্রপুর এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে গজারী বনের ভিতর নিয়ে যায়। সেখানে তাদের মারধর করে ও হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। এািদকে ডাকাতদের কয়েকজন গরু ও মহিষ ভর্তি ট্রাকটি রাজধানীর দিকে নিয়ে যায়।

তিনি আরো জানান, এ খবর জানতে পেরে গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আমির হোসেন এবং এসআই শহিদুল হক ও এসআই জাহিদুল হকের নেতৃত্বে দুটি টিম অভিযানে নামে। তারা গজারী বন থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আহত ওই ৫জনকে উদ্ধার করে। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোয়েন্দা পুলিশ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর তুরাগ থানাধীন দিয়াবাড়ি এলাকার আবুল কাশেমের খামারে অভিযান চালিয়ে লুণ্ঠিত ১৫টি গরু ও ২টি মহিষসহ ট্রাক উদ্ধার করে। এসময় ওই খামারের মালিক আবুল কাশেম ও মনির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা আন্তঃজেলা গরু ডাকাত দলের সদস্য। ইতোমধ্যে অসুস্থ্য একটি গরু মারা যায়। এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান, প্রতিবছর ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ও সড়ক-মহাসড়কে গরু-মহিষসহ নানা ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এবারের ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে এসব ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা প্রতিরোধে গাজীপুরে মহাসড়ক ও সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় চেকপোষ্ট বাড়ানো হয়েছে। ইতোমধ্যে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে গাজীপুরে একাধিক পয়েন্টে চেকপোষ্ট স্থাপন করা হয়েছে।