হেফাজত ইসলামের নেতা মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দেওয়ায় কুষ্টিয়া পুলিশের সেই সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) গোলাম রাব্বানীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৩ মে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, এএসআই গোলাম রাব্বানীর গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি কুষ্টিয়ার ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত ছিলেন। গত ৩ এপ্রিল এএসআই গোলাম রাব্বানী পুলিশের পোশাক পরে ফেসবুক লাইভে আসেন। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে নারীসহ অবরুদ্ধ হওয়ার ঘটনায় এএসআই গোলাম রাব্বানী হেফাজত নেতা মামুনুল হকের পক্ষে সাফাই গেয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করেছিলেন। সেখানে মামুনুর হকের পক্ষে তার ৬ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের বক্তব্যের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়।

পরে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. মুহিদ উদ্দিন বিষয়টি তদন্ত করার জন্য কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলমকে নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল অপেশাদার আচরণের অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছিল। সে সময় একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।

পুলিশ সুপারের ভাষ্যমতে, গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছিল। তদন্তের যেগুলো প্রক্রিয়া ছিল, তার সব কটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে চূড়ান্ত আদেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ২৩ মে থেকে তিনি আর চাকরিতে নেই।

এদিকে চাকরিচ্যুত হওয়ার পর সাবেক এএসআই গোলাম রাব্বানী কুষ্টিয়া শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে হ্যান্ড মাইক নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়ার তিনদিন পর গত বুধবার শহরে সদ্য নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের কাছে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডমাইক হাতে তাকে বক্তব্য দিতে দেখেছেন অনেকে। অনেকেই সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য মুঠোফোনে ভিডিওধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দিলে সেটিও ভাইরাল হয়ে যায়। মুখে দাঁড়ি, মাথায় টুপি,পাঞ্জাবি-পায়জামা পরিহিত অবস্থায় ৫ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওর শুরুতেই দেখা যায় গোলাম রাব্বানী র‌্যাব-পুলিশকে বিষোদগার করে বক্তব্য রাখছেন।

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, বিষয়টি জানার পর তাকে (গোলাম রাব্বানী) থানায় নেওয়া হয়েছিল। পরে আজ তার পরিবারের লোকজন তাকে নিয়ে দিনাজপুরে চলে গেছেন।