কুষ্টিয়া শহরে প্রকাশ্যে মা-ছেলেসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাস্টমস মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন শাকিল (৩৫), আসমা (৩০) এবং রবিন (৬)। তাদের গুলি করে হত্যা করেন খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সৌমেন রায়। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মোস্তাফিজুর রহমান। জানা গেছে, নিহতরা সকলেই কুমারখালীর নাটুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তবে তারা কুষ্টিয়া শহরে থাকতেন। গুলিতে নিহত শাকিল বিকাশের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পর পর তিনটি গুলির শব্দ শুনে তারা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে তারা দেখতে পান শিশু রবিন, শাকিল ও আসমা মাটিতে পড়ে আছেন। ঘটনাস্থলে রবিন ও তার মা আসমার মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় শাকিলকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

পুলিশ জানায়, কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের কাস্টমস মোড়ে তিনতলা একটি ভবনের সামনে আসমা তার সন্তানকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শাকিলও সেখানে ছিলেন। বেলা ১১টার দিকে সৌমেন সেখানে আসেন ও আসমার মাথায় গুলি করেন। পরে শাকিলের মাথায় গুলি করেন, এ সময় রবিন দৌঁড়ে পালাতে গেলে সৌমেন তাকে ধরে মাথায় গুলি করেন। ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা লোকজন সৌমেনকে ধরতে এগিয়ে গেলে তিনি দৌঁড়ে কাস্টমস মোড়ের ওই তিনতলা বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়েন। এরপর লোকজন জড়ো হয়ে ওই ভবন লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।

পুলিশ আরও জানায়, খবর পেয়ে সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়। গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে দ্রুত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রথমে আসমাকে মৃত ঘোষণা করেন। শাকিল ও রবিনকে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে গেলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আসমার মা হাসিনা খাতুন বলেন, সকালে সৌমেন স্ত্রী-সন্তানকে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। পরে এ হত্যাকাণ্ডের কথা জানতে পারেন তারা।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল ইসলাম বলেন, ‘খুলনা ফুলতলা থানায় কর্মরত এএসআই সৌমেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসমাকে তার স্ত্রী বলে দাবি করেছেন। রবিন আসমার আগের ঘরের ছেলে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সৌমেনের স্ত্রী আসমার সাথে বিকাশকর্মী শাকিলের কোনো সম্পর্ক বা আর্থিক লেনদেনের ঝামেলা থাকতে পারে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আমরা সবগুলো বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি।’ পুলিশের ধারণা, এএসআই সৌমেনকে দেওয়া বন্দুক দিয়ে তিনি হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। বন্দুকটি জব্দ করা হয়েছে।