ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে কারখানার পাঁচ লক্ষাধিক টাকাসহ মালামাল লুটের ঘটনার মামলার আসামি গ্রেফতার ও ডাকাতির রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই গাজীপুর।গ্রেফতার কৃত আসামীর নাম মোঃ রবিউল শেখ (৩১)।সে -গোপালগঞ্জ জেলার মুকসেদপুর থানার কৃষ্ণপুর গ্রামের মোশারফ শেখের ছেলে।
গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, গত বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানরের গাছা এলাকায় নভোটেক্স (প্রাঃ) লিঃ প্রতিষ্ঠানে সসস্ত্র ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় ১০/১৫ জনের ডাকাত দল কারখানার নিরাপত্তা প্রহরীদের বেঁধে রেখে কারখানায় রক্ষিত ১৫ লাখ টাকা, ১০টি পিসির হার্ডডিস্ক, ২৬টি সিসি ক্যামেরার হাডডিস্ক ও দুইটি মোবাইল ফোন সহ গুরুত্বপূর্ন কাগজপত্রাদি চুরি করে নিয়ে যায় এবং কোম্পানীর আসবাবপত্র ভাংচুর করে ক্ষতি সাধন করে পালিয়ে যায়। ওইসময় কারখানার নিরাপত্তা প্রহরী বাবু মিয়াকে দাড়ালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ডাকাতরা। ওই ঘটনায় ফ্যাক্টরী এজিএম মোঃ আব্দুল কাইয়ূম কর্তব্যরত সিকিউরিটি গার্ড বাবু মিয়াসহ ফ্যাক্টরীর ০২ জন ফ্লোর অপারেটরকে এজাহারনামীয় আসামী করে গাছা থানায় অভিযোগ দাখিল করে। পরে গাছা থানা কর্তৃক অভিযোগপত্র দাখিল করার পর বিজ্ঞ আদালতের নিকট তদন্ত যথাযথ হয়নি মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় আদালত স্ব-প্রনোদিত হয়ে মামলাটি পুনঃ তদন্তের জন্য পিবিআই গাজীপুর জেলাকে নির্দেশ প্রদান করেন।

পরে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ আরিফুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্তে ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত মোঃ রবিউল শেখ (৩১) গত ১৪ জুন দিবাগত রাত ৩টায় গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন হরিদাসপুর এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারে পর জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল শেখ জানায়, প্রথমে সে ঢাকায় কাঁচা মালের ব্যবসা করত। ব্যবসায় লস হওয়ায় ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে সে রিক্সা চালাতো। পরবর্তীতে কয়েক জনের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচিতরা প্রত্যেকে ডাকাত দলের সদস্য। অত্র মামলার ঘটনার সাথে একত্রে পরিকল্পনা করে ঘটনার দিন তারা বাদীর প্রতিষ্ঠানে ১৩/১৪ জন লোক একত্রে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে ফ্যাক্টরীর মধ্যে প্রবেশ করে সিকিউরিটি গার্ডদের একটি রুমের মধ্যে আটক রেখে উল্লেখিত নগদ টাকাসহ মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।

তিনি আরো জানান, গ্রেফতাকৃত আসামীকে মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করলে সে নিজেকে ঘটনার সাথে জড়িত থাকা ও অন্যান্য আসামীদের নাম উল্লেখ করে সেচ্ছায় ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তিনি বলেন, তারা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। ঘটনার তারিখ ও সময়ে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ রবিউল শেখ অপর আসামীদের সাথে সঙ্গবদ্ধ হয়ে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে ফ্যাক্টরীতে প্রবেশ করতঃ সিকিউরিটি গার্ডদের একটি কক্ষে আটক রেখে মারপিট করে বাদীর প্রতিষ্ঠানের অফিসের ড্রয়ার তালা ভেঙ্গে নগদ টাকা, কম্পিউটার হার্ডডিস্ক, সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক ও মোবাইল ফোন লূন্ঠন করে নিয়ে যায়। আসামীর হেফাজত হতে লুন্ঠিত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের দল নেতাসহ অন্যান্য সদস্যদের নাম ঠিকানা সনাক্ত করা হয়েছে। অতিশ্রীঘ্রই দলনেতা সহ বাকী সদস্যদের গ্রেফতার করা হবে। আসামীরা মূলত ফ্যাক্টরীর সুইং মেশিন লুন্ঠন করার জন্য প্রবেশ করে। কিন্তু তাদের ট্রাক ভাড়া না হওয়ায় সুইং মেশিন লুন্ঠন করতে ব্যর্থ হয়। ঘটনার সাথে কোন নিরাপত্তা প্রহরী জড়িত আছে কিনা এ সংক্রান্তে তদন্ত অব্যাহত আছে।