মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় ভালো সাড়া পাচ্ছেন বাংলাদেশের মানুষ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের যেসব শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন, তাদের ৯৩ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের এ গবেষণার ফলাফল রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। গবেষণায় কোভিশিল্ড টিকা নেওয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ৩০৮ জন চিকিৎসক, শিক্ষক, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পাঁচ মাসব্যাপী পরিচালিত এ গবেষণায় অর্থায়ন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এতে নেতৃত্ব দেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. এস এম সামসুজ্জামান। গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ নেওয়া ৪১ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া ৯৩ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

ডা. এস এম সামসুজ্জামান বলেন, ‘আমরা টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের অ্যান্টিবডির উপস্থিতি দেখতে চেষ্টা করেছি। গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ৮০ শতাংশের বয়স ছিল ৪০ থেকে ৫০ বছর। আমরা বলতে পারি, টিকা নেওয়ার পর মৃত্যু হবে না, আক্রান্ত হলেও উপসর্গ দেখা দেবে না, আক্রান্ত হলেও মারাত্মক হবে না।’

ডা. সামসুজ্জামান আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, টিকা নেওয়ার পর কী পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে তা যাচাই করা। আমরা যে ফল পেয়েছি তা অত্যন্ত ইতিবাচক। যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া ব্যক্তিদের শতভাগ অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। সামনে আমাদেরও হয়তো এমন হবে। তবে অ্যান্টিবডি কত দিন থাকবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’ সামনে চীনের টিকায়ও এমনভাবে অ্যান্টিবডি যাচাইয়ের পরিকল্পনা আছে বলেও জানান তিনি।

অর্থায়ন পেলে সামনে আরো বড় পরিসরে গবেষণা চালানো হবে বলে জানিয়েছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্য গবেষকেরা। এই গবেষণার ফলাফল পুরো সমাজের চিত্র কিনা- এই প্রশ্নের জবাবে ঢামেকের অধ্যক্ষ ডা. মো. টিটু মিয়া বলেন, ‘এটা পুরো দেশের চিত্র বহন করে না। কারণ, এই গবেষণা করা হয়েছে একটি বিশেষ শ্রেণির ওপর।’

‘তবে, ৩০৮ জনের এই স্যাম্পল সাইজ কিন্তু একেবারে কম না। এটা থেকে আমরা মোটামুটি একটা ধারণা পেতে পারি’ যোগ করেন তিনি। ঢামেক অধ্যক্ষ বলেন, পুরোপুরি নিশ্চিত হতে হলে আরও বড় পরিসরে গবেষণা করার প্রয়োজন আছে।