নওগাঁর রাণীনগরে কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর গ্রামে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি ফুট ব্রীজের নির্মাণ কাজ। এলাকার জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে বরাদ্দ সাপেক্ষে ব্রীজ নির্মাণের প্রাথমিক কাজ হিসেবে খালের দুই পাড়ে শুধুমাত্র খাম্বা তৈরির পর রহস্যজনক কারণে প্রায় পাঁচ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে নির্মাণ কাজ। দীর্ঘদিন ধরে এই ব্রীজের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় ওই এলাকার দুইটি ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের বসবাসরত মানুষসহ স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদের রতনডারি খাল পাড় হতে চরম দূর্ভোগের শিকারে পড়ছে। তবে শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হেঁটে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে খালে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পারিবারিক ডিঙ্গি নৌকায় ভরসা হয়ে দাঁড়ায় এই এলাকার সাধারণ মানুষের।

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার সদর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণে কাশিমপুর-গোনা ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষে বয়ে গেছে রতনডারি খাল। ১৯১৪ সালে কৃষি জমিতে সেচ ব্যবস্থা ও নৌ চলাচলের স্বাভাবিক গতি ধরে রাখার জন্য এই খালের পানি প্রবাহ সচল রাখার লক্ষ্যে স্থাণীয় সরকার প্রকৌশলী রাণীনগরের উদ্যোগে কুজাইল স্লুইচ গেট থেকে হাতিরপুল হয়ে রক্তদহ বিল পর্যন্ত খাল খনন করা হয়। যার ফলে এই খালে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে রাণীনগর উপজেলা পরিষদের রাজস্ব উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রায় ১৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ স্বাপেক্ষে কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর গ্রাম সংলগ্ন রতনডারি খালের উপর ফুট ব্রীজ নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালের মার্চ মাসে একটি দরপত্র আহবান করা হয়। দরপত্র আহবানের পর দাপ্তরিক সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষে নওগাঁ সদরের পার-নওগাঁ মহল্লার মো: গোলাম কিবরিয়া নামের ঠিকাদার নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়। সেই মোতাবেক তৎকালিন সময়ে শুষ্ক মৌসুমে ওই খালের দুই পাড়ে খাম্বা নির্মাণের পর রহস্যজনক কারণে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও এই ব্রীজটি নির্মাণে দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় এলাকাবাসির মাঝে প্রশ্ন উঠেছে কবে শেষ হবে এর নির্মাণ কাজ।
উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: মকলেছুর রহমান বাবু জানান, জনগণের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে সর্Ÿরামপুর-ভবানীপুর চৌতাপাড়ায় একটি ব্রীজ নিমার্ণের জন্য ২০১৬ সালে সাড়ে ১৮ লক্ষ টাকা উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন তহবিল থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক কিছু কাজ হলেও বাঁকি কাজ দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে। নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য আমি বার বার সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে কোন কাজ হচ্ছে না। অতি শীঘ্রই এই ব্রীজ নির্মাণ করার দাবি জানাচ্ছি।

উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মো: সহিদুল ইসলাম জানান, ব্রীজটি নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করা একান্ত জরুরি। এই ব্রীজের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করতে এখনও প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা লাগবে। উপজেলা পরিষদের তহবিলে এই পরিমাণ টাকা না থাকায় ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। তবে বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে এই ব্রীজের নির্মাণ কাজ করা হবে।