পাবনার সদর উপজেলা মালঞ্চি ইউনিয়নের সিংগা উত্তরপাড়ায় সোলাইমান মৃধা (২৩) নামে মাদকাসক্ত যুবককে চিকিৎসার নামে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের অভিযোগ, আলোর পথ নামে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে তার সন্তানের সুচিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। ভর্তি করে দিয়ে আসার রাতেই মৃত্যুর খবর পেয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার রাতে কোন এক সময়ে এই ঘটনা ঘটে।
মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এটিকে আত্মহত্যা বলে দাবী করলেও নিহত যুবকের পরিবার দাবী করছে শারীরিক ভাবে নির্যাতনের পর তাদের সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের বাবা আব্দুল মান্নান মৃধা বলেন, আমার ছেলে দীর্ঘ দিন ধরে মাদকাসক্ত ছিলো। তাকে ভালো করার জন্য আমরা স্থানীয় আলোর পথ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যোগাযোগ করে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি। মাসিক ১০ হাজার টাকা চিকিৎসা বাবদ খরচের চুক্তিতে বৃহস্পতিবার সেখানে ভর্তি করা হয়। কিন্তু ভর্তি করে আসার রাতেই ওই নিরাময় কেন্দ্র থেকে মোবাইলে জানানো হয় আপনার ছেলে সোলাইমান গলায় ফাঁস নিয়েছে। আমরা তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছি। সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখি আমার সন্তানের গলায় ফাঁসের কোন চিহ্ন নেই। ওরা চিকিৎসার নামে জোরপূর্বক শারিরীক নির্যাতন করার ফলে আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে আলোর পথ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ম্যানেজার মোসাদ্দেকুর রহমান জানান, ছেলেটি নিজেই নিরাময় কেন্দ্রের বাথরুমে গিয়ে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। আমরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে বাথরুমে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। তাকে চিকিৎসার নামে কোন শারীরিক বা মানসিক নির্যতান করা হয়নি।
উল্লেখ্য, পাবনা বেশ কিছু বেসরকারী মাদক নিরাময় কন্দ্রে বা ক্লিনিক রয়েছে, মূলতঃ সেখানে কোন প্রকার চিকিৎসা হয় না। স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কতিপয় অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মাসোহরা ভিত্তিতে এসব প্রতিষ্ঠান চলছে। বার বার লেখালেখি হলেও কারো কোন নজর নেই। এ সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার মাস্তান বাহিনীরাও জড়িত।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ (অপরাধ) সুপার মাসুদ আলম বলেন, স্থানীয় ভাবে জেনেছি একটি যুবক মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যা নাকি হত্যা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে পরিস্কার হবে। পুলিশ এ বিষয়ে কাজ করছে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।