বাংলাদেশে হৃদরোগের প্রকোপ বৃদ্ধির জন্য খাদ্যাভাস এবং জীবনযাপন পদ্ধতি সরাসরি প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন সেন্টার ফর স্পেশালাইজড কেয়ার এন্ড রিসার্স (সিএসসিআর) এর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মো. ইব্রাহিম চৌধুরী।

প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে চট্টগ্রামের প্রখ্যাত এই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত কোলেস্টোরল যুক্ত কিংবা তৈলাক্ত খাবার এবং ধুমপান এই কয়েকটি কারণে বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে হৃদরোগের প্রকোপ বেশি।’

বাঙালিরা বিশেষ করে ভাতের প্রতি অতি নির্ভরশীল। গরুর মাংসের মতো রেড মিট (লাল মাংস) খাওয়ার পরিমাণ চট্টগ্রামের মানুষ তথা বহু অঞ্চলের মানুষ কমাচ্ছে না। এরকম খাদ্যাভাস ও জীবনযাপন হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। আবার কম বয়সী হৃদরোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি ধুমপানের বদঅভ্যাসকে দায়ী করেছেন। এক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব হৃদরোগের চিকিৎসা করানো উচিৎ। দেরি হয়ে গেলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে বলে মন্তব্য করেছেন।

জানা যায়, প্রতি বছরই ভালো চিকিৎসার জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার পথে রোগীরা ছুঁটাছুটি করেন। বলতে গেলে আস্থা রাখতে পারছেন না দেশীয় চিকিৎসকের উপর।

কিন্তু শুনে আশ্চর্য হবেন যে, উপমহাদেশের প্রখ্যাত কার্ডিয়াক সার্জন ভারত সরকার ২০১২ সালে যাকে ‘পদ্মভুষণ’ পদকে ভুষিত করেছেন তিনি হলেন ডা. দেবী প্রসাদ শেঠি। যিনি কয়েকমাস আগে চট্টগ্রামের এক হৃদরোগী মো. শাহাজাহান ও কক্সবাজারের হাজী কবির আহমেদ এর সমস্ত প্রেসক্রিপশন দেখে দুজনকেই জানান, বাংলাদেশের যে চিকিৎসক মানে ডা. মো. ইব্রাহিম চৌধুরী যে ব্যবস্থাপত্র বা মেডিসিন দিয়েছেন তা শতভাগ সঠিক। আপনারা উনার কাছে যান।’

একথা শোনে তো রোগীরা অবাক। দুজনেই ভাবলেন, দেশের ডাক্তারের প্রতি আমাদের কেন আস্থা কমে যাচ্ছে? বাংলাদেশের যেসব ডাক্তারের প্রতি আমরা আস্থা রাখতে পারছি না? সেই ডাক্তারদের চিকিৎসা দেখে স্বয়ং এশিয়া মহাদেশের বিখ্যাত হার্ট সার্জন দেবী শেঠি আস্থা রাখলেন।

পরে দেশে এসে তাঁরা চট্টগ্রাম শহরের প্রবর্তক মোড়ে অবস্থিত সেন্টার ফর স্পেশালাইজড কেয়ার এন্ড রিসার্স (সিএসসিআর) হৃদরোগ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহীম চৌধুরীকে দেখিয়ে পুরোপুরি সুস্থ্য জীবনে ফিরে আসেন।

ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহীম চৌধুরী এমবিবিএস, এফসিপিএস (মেডিসিন) ডি-কার্ড, এমডি (কার্ডিওলজি) বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক বলেন, ‘ভাজা-পোড়া খাবার, কাচ্চি বিরিয়ানি, খাসি-গরুর মাংসের লোভ কমাতে হবে। রেড মিট তুলনামুলক অস্বাস্থ্যকর। মাংস খেলে মুরগির মাংসই বেছে নিতে হবে। সবচেয়ে ভালো হচ্ছে মাছ খাওয়া। তরুণদের ধুমপান ছাড়তে হবে।’

 

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি