২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা না থাকায় ৪ শয্যার আইসিইউ ইউনিট অচল হয়ে পড়ে আছে। করোনা আক্রান্ত মরণাপন্ন রোগীকে পাঠানো হচ্ছে রাজশাহী নতুবা ঢাকা মেডিকেলে। উন্নত চিকিৎসা পাবার আগেই অনেকে পথিমধ্যে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন।

তথ্যমতে, এই হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রাংশ রয়েছে। কেবল কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু না থাকায় হাসপাতালে অচল পড়ে আছে চার শয্যার আইসিইউ ইউনিট। কাজে আসছে না ভেন্টিলেটর, হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলাসহ মুমূর্ষু করোনা রোগীদের চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। এতে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পাবনা জেনারেল হাসপাতালে সংকটাপন্ন করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

পাবনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে হাসপাতালটিতে আইসিইউ ইউনিট চালুর জন্য ৪টি শয্যা ও ৪টি কার্ডিয়াক মনিটর স্থাপন করা হয়। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় অক্সিজেনের সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। জুনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তরল অক্সিজেন বরাদ্দ না পাওয়ায় অক্সিজেন ট্যাংকারের মাধ্যমেও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল প্রশাসন।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের প্রধান সহকারী রুহুল হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহের জন্য লিকুইড অক্সিজেন কাঠামো নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। লিকুইড অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় এটি চালু করা যাচ্ছে না। জরুরি ভিত্তিতে বড় সিলিন্ডার সংযোগ দিয়ে মেডিফোল্ড পদ্ধতিতে হাই-ফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে হাসপাতালের গুরুতর রোগীদের। তবে তা পর্যাপ্ত নয়।

স্পেক্ট্রা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম জানান, পাবনা জেনারেল হাসপাতালে লিকুইড ট্যাংকার ও পাইপলাইন সংযোগের কাজ শেষ করা হয়েছে। তরল অক্সিজেনের মাধ্যমে কবে এই হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ শুরু করা সম্ভব হবে তা এই মুহুর্তে বলা সম্ভব নয়।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও করোনা ইউনিটের প্রধান চিকিৎসক ডা. সালেহ মোহাম্মদ আলী বলেন, হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেনের ব্যবস্থা চালু না থাকায় আমরা সংকটাপন্ন রোগীদের আইসিইউ, এইচডিইউ সুবিধা দিতে পারছি না।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, তরল অক্সিজেন বরাদ্দ পেলে পাবনায় করোনা রোগীদের সর্বোচ্চ আধুনিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। আমরা দ্রুততম সময়ে তরল অক্সিজেন বরাদ্দ চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি।