বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এ পর্যন্ত বিভিন্ন ফসলের ৬০২টি উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিডসহ), রোগ প্রতিরোধক্ষম ও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশ প্রতিরোধী জাত এবং ৫৭৬টি অন্যান্য প্রযুক্তিসহ এযাবৎ ১হাজার ১৭৮টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এ সকল প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে দেশে গম, তেলবীজ, ডালশস্য, আলু, সবজি, মসলা এবং ফলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। রবিবার গাজীপুস্থিত বারি’র কাজী বদরুদ্দোজা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক “অভ্যন্তরীণ গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালা-২০২১” এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বারি’র মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার গবেষণা কার্যক্রম পরিকল্পনা তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি আবহাওয়া উপযোগী পুষ্টিমান সমৃদ্ধ ফসলের জাত উদ্ভাবনের জন্য বিজ্ঞানীদের আহবান জানান।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স¦াগত বক্তব্য ও বারি’র গবেষণা কার্যক্রম ও সাফল্যের ওপর সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. তারিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্য রাখেন বারি’র পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. মো. কামরুল হাসান। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ) ড. মুহাম্মদ সামসুল আলম পরিচালক (পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন ) ড. রীনা রানী সাহা ।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে দেশের কৃষি উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছেন। জাতীয় কৃষি উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। এইসব কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হচ্ছে পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ, কৃষিতে বৈচিত্র আনায়ন এবং চালের ওপর চাপ কমানো। দেশের কৃষিতে বিদ্যমান যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা থেকে উত্তরণের বিভিন্ন উপায় এসব পরিকল্পনায় থাকে। বক্তারা আশা করেন অভ্যন্তরীণ গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালা-২০২১ এর মাধ্যমে যেসব পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে তা দেশের কৃষি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

আয়োজকরা জানান, বিগত বছরে যেসব গবেষণা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছিল সেগুলোর মূল্যায়ন এবং এসব অভিজ্ঞতার আলোকে আগামী বছরের গবেষণা কর্মসূচি প্রণয়নের উদ্দেশ্যে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এ কর্মশালা চলবে আগামী ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। উদ্ভাবিত প্রযুক্তির উপযোগিতা যাচাই বাছাই ও দেশের বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কর্মসূিচ গ্রহন করাই এ কর্মশালার প্রধান উদ্দেশ্য।