ঝিনাইদহ পৌরসভা এলাকায় অবস্থিত পাবলিক পার্কের (শিশু পার্ক) মাঠ (দুই দশমিক ১৮ শতাংশ) থেকে মসজিদ ব্যতিত অন্যান্য সব অবকাঠামো অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, এ-সংক্রান্ত রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৬ মাসের মধ্যে মাঠ থেকে সব অবকাঠামো সরিয়ে মাঠ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা এক রিট আবদেনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ রায়ে এ আদেশ দেন।

এদিন আদালতে বেলার পক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ কবীর।

২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে ওই শিশু পার্কে বহুতল ভবন নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। একইসঙ্গে, পাবলিক পার্কের (শিশু পার্ক) শ্রেণি অপরিবর্তিত রেখে জমিটি ‘পার্ক’ হিসেবে সংরক্ষণ ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। রুলে পাবলিক পার্কের (শিশু পার্ক) মাঠের জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণকাজকে কেন বিবাদীদের ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

পরিবেশ, স্থানীয় সরকার এবং বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও পৌরসভার মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়। ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে আজ রায় দেন হাইকোর্ট।

২০১৯ সালে করা রিট আবেদনে বলা হয়েছিল, এলাকার শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের মানুষের বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে পার্কটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জাতীয় দিবসসহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি এ পার্কেই পালন করা হয়। প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার মানুষ এ পার্কে ভ্রমণ করে থাকেন। কিন্তু অতি সম্প্রতি ঝিনাইদহ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পার্কটিতে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।

এরইমধ্যে পার্কে বিদ্যমান শিশুদের খেলার সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বুলডোজার দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে গাছ, মাটি ভরাট করা হয়েছে এবং পাইলিং-এর কাজ চলমান রয়েছে।

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয়রা এ পার্কটি রক্ষার দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বেলার কাছে এ বিষয়ে আইনগত সহায়তা চেয়ে আবেদন করেছেন এলাকার লোকজন।