সমগ্র মালয়েশিয়ায় ফাইভজি সিঙ্গেল হোলসেল নেটওয়ার্ক সরবরাহের লক্ষ্যে ডিজিটাল ন্যাশিওনাল বারহাদের (ডিএনবি) সাথে ১০ বছরের অংশীদারিত্ব করেছে এরিকসন মালয়েশিয়ার ডিজিটাল রূপান্তর ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকে ত্বরান্বিত করবে ফাইভজি কোর, রেডিও অ্যাক্সেস (আরএএন) ও ট্রান্সপোর্ট, অপারেশন ও বিজনেস সাপোর্ট সিস্টেম (ওএসএস/বিএসএস) এবং ‘ম্যানেজড সার্ভিস’ সমন্বিত পূর্ণাঙ্গ ফাইভজি সহায়তা প্রদান করবে এরিকসন মালয়েশিয়ায় পরবর্তী প্রজন্মের ওয়্যারলেস সেলুলার প্রযুক্তি স্থাপনে এরিকসন (এনএএসডিএকিউ: এরিক) এবং ডিজিটাল ন্যাশিওনাল বারহাদের (ডিএনবি) মধ্যে ১০ বছরের অংশীদারিত্ব হয়েছে। এই অংশীদারিত্ব মালয়েশিয়া এবং মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে প্রত্যাশা করা যাচ্ছে।

ফাইভজি’র গতি, লো ল্যাটেন্সি এবং লার্জ-ডেটা-হ্যান্ডলিং সক্ষমতা দেশটির ডিজিটাল রূপান্তরে সহায়তা করার পাশাপাশি, একটি ফাইভজি ইকোসিস্টেম তৈরি করবে, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), অগমেন্টেড রিয়্যালিটি (এআর), ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি (ভিআর) ও বিভিন্ন পরিসরের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ইন্ডাস্ট্রি ও বিভিন্ন সেক্টরে ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) এর ব্যবহারে উদ্ভাবনের বিকাশ ঘটাবে।

ফাইভজি’র সক্ষমতা ব্যবহার এবং সমগ্র মালয়েশিয়ায় ফাইভজি নেটওয়ার্ক ও ইকোসিস্টেম স্থাপন ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে ডিএনবি, মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত অন্যান্য নিয়ন্ত্রকদের প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ ও সেবা প্রদান করবে। এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় বিশ্বমানের ফাইভজি অভিজ্ঞতা প্রদান এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকে বাস্তবে পরিণত করা সম্ভব হবে।

ডিএনবি’র প্রধান নির্বাহী রালফ মার্শাল বলেন, “মালয়েশিয়া যাতে বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতিতে প্রথম সারিতে নিজের জায়গা নিশ্চিত করতে পারে, সে লক্ষ্যে ডিএনবি মালয়েশিয়ার জনগণ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারকে সেরা প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের সুযোগ প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ডিএনবি’র সুনির্দিষ্ট এবং ব্যতিক্রমী প্রয়োজনীয়তা অনুসারে পরবর্তী প্রজন্মের সেরা ফাইভজি প্রযুক্তি এবং প্রফেশনাল সেবা প্রদান করতে এরিকসন সক্ষম বলে আমরা মনে করি।”

বুমিপুতেরা, অন্যান্য স্থানীয় ঠিকাদার ও ইকোসিস্টেম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে অংশীদারিত্বে জাতীয় ফাইভজি প্রকল্পে এরিকসনের অংশগ্রহণ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে এবং মালয়েশিয়ায় জ্ঞান ও সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রাখবে।

মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ এরিকসনের প্রধান ডেভিড হ্যাগারব্রো বলেন, “ফাইভজি উন্মুক্ত উদ্ভাবনের প্ল্যাটফর্ম এবং মূল ভিত্তি হয়ে উঠছে, আর এর ওপরে ভিত্তি করেই তৈরি হবে কোনো দেশের সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব। মালয়েশিয়া এবং ডিএনবি’র ফাইভজি স্থাপন ত্বরান্বিত করার প্রতিশ্রুতি সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি জাতীয় পরিসরে ফাইভজি গ্রহণের গতি ত্বরান্বিত করবে, ডিজিটাল বিভাজন দূর করবে এবং দেশের রূপান্তরে কাজ করবে। ফাইভজি অ্যাপ্লিকেশন এবং কেস ব্যবহারের মাধ্যমে মালয়েশীয়দের প্রযুক্তি নির্মাতা হিসেবে গড়ে তোলার সরকারের প্রয়াসে সহায়তা করবে ফাইভজি।”

তিনি আরও বলেন, “মালয়েশিয়ার উন্নয়নে কাজ করার ৫৬ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের। দেশের প্রতি দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতি আরও দীর্ঘায়িত করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এরিকসন আত্মবিশ্বাসী যে, বিশ্বব্যাপী ফাইভজি’তে আমাদের নেতৃত্ব এবং এ প্রযুক্তি স্থাপন ক্ষমতার ফলে ডিএনবি’র নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণ করতে আমরা সফল হবো।”

এরিকসনের সাথে ডিএনবি’র এই বিশেষ অংশীদারিত্বের ফলে এরিকসন বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ফাইভজি কাভারেজের সফটওয়্যার এরিকসন স্পেকট্রাম শেয়ারিং সহ জ্বালানি-সাশ্রয়ী এরিকসন রেডিও সিস্টেম পণ্য এবং সমাধান সরবরাহ করবে। এই সমাধানের মধ্যে রয়েছে ক্লাউড-নেটিভ ফাইভজি কোর এবং দেশব্যাপী ফাইভজি রেডিও অ্যাক্সেস (আরএএন)। এরিকসনের শীর্ষস্থানীয় ‘ম্যানেজড সার্ভিস’ এরিকসন অপারেশনস ইঞ্জিনের মাধ্যমে সিঙ্গেল হোলসেল নেটওয়ার্কের ব্যতিক্রমী প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করবে। সমস্যা অনুমান ও সমাধানে এআই, অটোমেশন এবং কগনেটিভ সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে এই সমাধান ডিএনবি’র নেটওয়ার্কের পারফরমেন্সের উন্নয়নে কাজ করবে। এরিকসনের পূর্ণাঙ্গ সমাধানের মধ্যে আরও থাকবে অপারেশনাল সাপোর্ট সিস্টেম (ওএসএস) এবং বিজনেস সাপোর্ট সিস্টেম (বিএসএস) সমাধান।
মালয়েশিয়া সরকারের মাইডিজিটাল নকশা (ব্লুপ্রিন্ট) অনুসারে মালয়েশিয়ার ডিজিটাল লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করার দায়িত্ব ডিএনবি’র। এই ব্লুপ্রিন্টে মালয়েশিয়াকে ডিজিটাল চালিত, উচ্চ আয়ের দেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ডিজিটাল কন্টেন্ট, সাইবার নিরাপত্তা ও ডিজিটাল অর্থনীতিতে শীর্ষ দেশ হিসেবে উপনীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

মালয়েশিয়ার সকল জনগণের জন্য মানসম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে জাতীয় ডিজিটাল অবকাঠামো পরিকল্পনা জালিনান ডিজিটাল নেগারার (জেন্ডেলা) অংশ হিসেবে ডিএনবি দেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণে সহায়তা করছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কুয়ালালামপুর, পুত্রজায়া এবং সাইবারজায়ায় মালয়েশিয়ার প্রথম ফাইভজি নেটওয়ার্ক চালু করা ডিএনবি’র লক্ষ্য। ২০২৪ সালের মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ জনগণকে ফাইভজি কাভারেজের আওতাভুক্ত করার ডিএনবি’র লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবে এরিকসনের স্থানীয় উপস্থিতি এবং এর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা। ৪৬টি দেশে ৯৭টি ফাইভজি নেটওয়ার্ক পরিচালনার মাধ্যমে এরিকসন বৈশ্বিক ফাইভজি’তে শীর্ষস্থানে রয়েছে।