মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউপি আওতাধীন বাজার সংলগ্ন মির্জাপুর চা বাগান অবস্থিত। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুফি মিয়ার জোর পূর্বক পেশিশক্তি ব্যবহার করে ইস্পাহানী কো: মির্জাপুর চা বাগানের জমিতে পাবলিক টয়লেট নির্মাণের জন্য চা বাগানের নির্দিষ্ট সীমানা প্রাচীর (পিলার) অতিক্রম করে বাগানের জমিতে টয়লেট নির্মান কাজের শুরু করতে যান। তত মূহুর্তে বাগান কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব প্রাপ্ত উপব্যবস্থাপক জুলকারনাইন মাসুম, সহকারী ব্যবস্থাপক জায়ান মজুমদার, কাজী আমিরুল আবিদ কাজে বাঁধা দেন। কিন্তু সব বাঁধা উপেক্ষা করে সুফি মিয়া ও সহযোগী মামুন হোসেন, জামাল মিয়া সহ নাম না জানা অনেকেই উপস্থিত থেকে উপ ব্যবস্থাপক ও সহকারী ব্যবস্থাপক সহ সকলের সাথে বাকবিতন্ডায় জরিয়ে পরেন। এক পর্যায়ে তর্কবিতর্কে মাঝে হঠাৎ করে সুফি মিয়ার অনুসারী হতে বাগান কর্তৃপক্ষের দিকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। ঐ মূহূর্তে বাগান শ্রমিগন খবর পেয়ে যান এবং পরিস্থিতি বেগতিক শুনে ছুটে গিয়ে বাগানের পাগলা ঘন্টি বাজিয়ে দেন। মূহূর্তের মধ্যে বাগানের চা শ্রমিকগন একত্রিত হতে থাকেন এবং বাগান কর্তৃপক্ষের উপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদে শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করে রাস্তার মধ্যে বসে প্রতিবাদ জানান। মূহূর্তের মধ্যে সুফি মিয়ার পক্ষের লোকজন অবরোধ করা শ্রমিকদের সাথে হাতাহাতির পর্যায়ে পরিস্থিতি বেগতিক হয়ে উঠে এলাকার আসপাশ। তমধ্যে ইট,পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে বাগান কর্তৃপক্ষ সহ শ্রমিকদের উপর চড়াও হয়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাজারের পরিবেশ। তারমাঝে হামলার ঘটনায় শ্রমিকদের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করার ফলে ১০জন শ্রমিক চৌকিদার আহত হন। খবর পেয়ে মির্জাপুর চা বাগানের উর্ধতন ব্যবস্থাপক মোঃ সাইদুজ্জামান ঘটনা স্থলে উপস্থিত হওয়ার আগ মুহূর্তে ,মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ জামাল’কে খবর দেন।খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরে স্থানীয় মির্জাপুর ইউপি মেম্বার সাহানুর মিয়া, ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মনু মিয়া, আওয়ামীলিগ নেতা অপূর্ব দেবসহ বাজারের নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। শ্রমিকদের দাবি অতিদ্রুত হামলার ও এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার এবং বাগানের দখলকৃত জমি ফেরত পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ স্থগিত করে কাজে ফেরত যায়। বাগানে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।

এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে রোজ শনিবার (২ অক্টোবর) অনুসন্ধানে, মির্জাপুর ফাঁড়ি ইনচার্জ মোঃ জামাল এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে জানান, বাগান কর্তৃপক্ষ ও চা-শ্রমিকদের উপর হামলার বিষয়টি ঘটনা স্থলে পৌঁছে জানতে পারি।তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে , স্থানীয় ইউপি মেম্বার প্যানেল চেয়ারম্যান সহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে পরিবেশ শান্ত করি এবং বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।ঘটনার বিষয়টি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে মধ্যেস্তা করে প্যানেল চেয়ারম্যান মনু মিয়া তার বিহিত ও সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আশ্বাস প্রদান করেন তমধ্যে আমরা তাদের জিম্মায় ঘটনাটির সমাধানের জন্য অনুরোধ জানালে তাদের উপর দায়িত্ব ভার প্রদান করি।তবে বাগান কর্তৃপক্ষ লিখিত কোন অভিযোগ প্রদান করলে আইনানুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলে জানান তিনি।

এই বিষয়ে মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুফি মিয়ার সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে মোবাইল ফোনে কোন উত্তর পাওয়া যাযনি। মধ্যেস্তাকারি প্যানেল চেয়ারম্যান মনু মিয়া এর সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, ঘটনা সত্য তবে আমরা তার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সময় নিয়েছি। আসন্ন উপজেলা নির্বাচন এজন্য নির্বাচন পরে এর সমাধানের জন্য সম্মলিত ভাবে সমাপ্তির জন্য চেষ্টা করবো। তিনি এও বলেন আল্লাহর রহমতে বড় কোন দূর্ঘটনার মুখোমুখি হতে আমরা রক্ষা পেয়েছি।

এবিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা অপূর্ব দেব ও ইউপি মেম্বার সানাউল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে দুজনেই জানান, যদিও ঘটনা কালে শুরুতে ছিলাম না কিন্তু খবর পাওয়ার পর ঘটনা স্থলে পৌঁছে সম্মলিত ভাবে সমাপ্তির আশ্বাস প্রদান করি পুলিশ সহ বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে।

মির্জাপুর বাগানের উর্ধতন ব্যবস্থাপক মোঃ সাইদুজ্জামান ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে জানান, এইরকম ঘৃণিত ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে স্থানীয়দের আশ্বাসে আমরা এর অপেক্ষায় আছি। তিনি আরো ও জানান, বাগানের জমিতে জোরে পূর্বক টয়লেট তৈরি ও উপ ব্যবস্থাপকসহ শ্রমিকদের উপর হামলার সুষ্ঠু সমাধান না পাওয়া গেলে আমরা আইনকে সন্মান রেখে আইনানুগ ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি