নিখোঁজের ৩দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাইদা গাফফার (৭১) এর লাশ গাজীপুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার মহানগরীর দক্ষিণ পাইনশাইল এলাকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবাসন প্রকল্পের একটি ঝোপের ভিতর থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাকে শ্বাসরোধে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহতের নির্মাণাধীন বাড়ীর রাজমিস্ত্রীর হেলপারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নিহত সাইদা গাফফার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মৃত কিবরিয়া উল খালেকের স্ত্রী।
গ্রেফতারকৃতের নাম- আনারুল ইসলাম (২৫)। সে গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুর থানার বুর্জুগ জামালপুর গ্রামের আনসার আলীর ছেলে।

জিএমপি’র কাশিমপুর থানার ওসি মাহবুবে খোদা ও নিহতের পরিবার জানান, ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন অধ্যাপক সাইদা গাফ্ফার। তিনি গত প্রায় ১১ মাস ধরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পানিশাইল এলাকার মোশারফ হোসেন মৃধার বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ভাড়া বাসায় থেকে তিনি একই এলাকাস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আবাসন প্রকল্পের ভেতরে বাড়ি নির্মাণ করছিলেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ হন তিনি। তার বাসার দরজা খোলা ছিল। পরে নিখোঁজের বিষয়টি তাঁর ছেলেকে মোবাইলে ফোনে জানান বাড়ির ঠিকাদার আনোয়ার হোসেন। রাত সোয়া ৯টায় অধ্যাপক সাইদার ছেলে ও মেয়ে সাদিয়া আফরিন কাশিমপুরে এসে মাকে খাঁজাখুঁজি শুরু করেন। স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পায় নি। এ ব্যাপারে তাঁর মেয়ে সাহিদা আফরিন বুধবার কাশিমপুর থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেন।

জিএমপি’র কাশিমপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ মিজানুর রহমান জানান, সাধারণ ডায়রী করার পর নির্মাণাধীন বাড়ির প্লটে গিয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হয়। তদন্তের নানা তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্লটে কর্মরত রাজমিন্ত্রীর যোগালী আনারুলকে গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুর থেকে বৃহষ্পতিবার রাতে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে অধ্যাপক সাইদা গাফ্ফারকে হত্যার কথা স্বীকার করে আনারুল। শুক্রবার তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নির্মাণাধীন ওই বাড়ির পার্শ্ববর্তী (আনুমানিক ২০০ গজ দূরে) একটি ঝোপের ভিতর থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় অধ্যাপক সাইদার লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়না তদন্তের জন্য নিহতের লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সাউদ ইফখার বিন জহির বাদি হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনসহ আনারুলকে আসামী করে শুক্রবার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, ঘটনার সময় প্রফেসর সাইদা গফফারের হাতে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে আনারুল। এসময় তাকে বাঁধা অধ্যাপক সাইদার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশ ওই ঝোপের ভিতর লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যায় বলে আনোয়ারুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।