বান্ধবীর সামনে নিজের হিরোইজম উপস্থাপনের জন্য হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্ট্যাম্প দিয়ে আশরাফুল ইসলাম জিতু মারধর করেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। র‍্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিতু জানিয়েছেন- বান্ধবী ও তাকে কলেজ ক্যাম্পাসে শাসন করার কারণেই ২৫ তারিখে স্কুলের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি উৎপল কুমার সরকারকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ কথা জানান।

 

তিনি বলেন, বুধবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এবং র‌্যাব-৪ এর যৌথ অভিযানে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জিতুকে গ্রেফতার করা হয়।

জিতু ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। সে শিক্ষা জীবনে বিরতি দিয়ে প্রথমে স্কুল, পরে মাদ্রাসা ও সর্বশেষ পুনরায় স্কুলে ভর্তি হয়। সে স্কুলে সবার কাছে একজন উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, মারামারিসহ স্কুলের পরিবেশ নষ্টের জন্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ও স্কুল চলাকালীন ছাত্রীদের ইভটিজিং ও বিরক্ত করত। স্কুল প্রাঙ্গনে সবার সামনে ধুমপান, স্কুল ইউনিফর্ম ব্যতিত স্কুলে আসা-যাওয়া, মোটরসাইকেল নিয়ে বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করত। সে তার নেতৃত্বে এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং গড়ে তুলে তাদের নিয়ে মাইক্রোবাসে করে যত্রতত্র আধিপত্য বিস্তার করত। পরিবারের কাছে তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে জিতু তার অনুসারি গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হতো ও বিভিন্ন সময় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে হামলা ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে শোডাউন দিতো।

তিনি জানান, ঘটনার কয়েকদিন আগে ওই স্কুলের এক ছাত্রীর সঙ্গে জিতুর অযাচিতভাবে ঘোরাফেরা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে নিহত শিক্ষক বারণ করেন। এ ঘটনায় সে তার শিক্ষকের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়। ওই ছাত্রীর কাছে নিজের হিরোইজম প্রদর্শন করার জন্য তার ওপর হামলার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৫ জুন একটি ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প স্কুলে নিয়ে আসে এবং তা শ্রেণিকক্ষের পেছনে লুকিয়ে রাখে। নিহত শিক্ষককে আঘাত করার সুযোগ খুঁজতে থাকে।

 

পরবর্তীতে কলেজ মাঠে ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালীন শিক্ষক উৎপল কুমারকে মাঠের এক কোণে শিক্ষককে একাকি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিতু স্ট্যাম্প দিয়ে অতর্কিতভাবে তাকে বেধড়ক আঘাত করতে থাকে। জিতু শিক্ষককে প্রথমে পেছন থেকে মাথায় আঘাত করে এবং পরবর্তীতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতরভাবে জখম করে।