বিএনপি আন্দোলনের নতুন রূপরেখা ঘোষণা করবে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে। বিএনপির নেত্রীবৃন্দ চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে জোটের আকার আরও বড় করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছ। বিএনপির নেতারা বলছেন, সরকারের পদত্যাগ চায়–এমন যেকোনো দল যুক্ত হতে পারবে তাদের আন্দোলনে।
রাজপথে বিএনপি নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদসহ নানা দাবিতে প্রতিবাদ করছে। পাশাপাশি সরকারের পদত্যাগ দাবির এক দফা আন্দোলনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি ও জোট দল গুলো। এরই মধ্যে ঐক্য গড়তে ডান-বাম-ইসলামি ২২টি দলের সঙ্গে সংলাপও করেছে তারা। আলোচনা হয়েছে অন্যান্য বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে। সংলাপ শেষে আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে দলটি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বৃহৎ ঐক্য গড়ে তোলার ব্যাপারে দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রূপরেখাকে নির্বাচনের আগে এবং পরে দুই ভাগে ভাগ করেছে দলটি। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, জাতীয় সরকার গঠন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ এবং রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে আন্দোলনের রূপরেখায়।
সফল হলে জাতীয় সরকার গঠনকে প্রাধান্য দিয়ে রাষ্ট্রব্যবস্থায় নানা সংস্কারের কথা বলা হয়েছে দ্বিতীয় ভাগে। সেগুলো হলো: নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, সাংবিধানিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠন, জুডিশিয়াল ও গণমাধ্যম কমিশন গঠন এবং রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের মধ্যে ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্য সমন্বয়।
বিএনপি নেতারা বলছেন, সরকারবিরোধী সব দলকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামবেন তারা। যে আন্দোলনে যুক্ত হতে পারবে যেকোনো দল। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার না এলে, পার্লামেন্ট না ভাঙলে, আমরা কোনো নির্বাচনেই যাব না। আমরা গণতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ যে আন্দোলন শুরু করেছি, সেটা চালিয়ে যাব। আমরা একটা কর্মসূচি দিয়েছি। সেটা এখনো শেষ হয়নি। এ আন্দোলনের আরও কর্মসূচি আমরা দেব।’
দলটির নেতারা মনে করেন, মামলা-হামলা হলেও আন্দোলন থেকে পিছু হটার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘যদি আন্দোলন দেখতে চান, তবে বলব যে আন্দোলন এখনো আমরা শুরুই করিনি। এটা হচ্ছে আন্দোলনের প্রস্তুতি। এ সরকার হামলা-মামলার সরকার। তারা হামলা করবে, মামলা করবে, যা খুশি করুক। এসব বিষয়ে বিএনপি এখন আর পরোয়া করে না।’ দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটিতে অনুমোদনের পর এ মাসের শেষ সপ্তাহে অথবা আগামী মাসের মাঝামাঝি জোটগতভাবে আন্দোলনের রূপরেখা তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা