ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। দুই ছাত্রনেতাকে হুঁশিয়ারি দেন কাদের বলেছেন, সংগঠনে অনুপ্রবেশ, প্রেস রিলিজে কমিটি গঠন, বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলায় নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। গত সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আয়োজিত এক সভা শেষে কাদেরের তোপের মুখে পড়েন দুই ছাত্রনেতা।

ছাত্রলীগের নেতা জয়-লেখককে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জেলায় জেলায় কমিটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ ঘটেছে; তাছাড়া প্রেস রিলিজে কমিটি দেয়ার কারণে এমনটি হয়েছে। এসব বন্ধ করতে হবে। যেখানে ঝামেলা সৃষ্টি হচ্ছে, সেখানেই তোমরা (জয়-লেখক) কথা বলে ঠিক কর। ছাত্রলীগকে আর বিতর্কিত করা যাবে না, দলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

কাল বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে সোমবার সকালে দলীয় কার্যালয়ে সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে যৌথসভা করেন দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা। এ সভায় সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সম্পাদকসহ অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতারাও। দলের যৌথসভার আগে ও সভা শেষে ওবায়দুল কাদের সাততলায় তার অফিস রুমে জয়-লেখককে ডেকে নিয়ে কথা বলেন।

‘ওবায়দুল কাদের সংগঠনে অনুপ্রবেশ নিয়ে চরম বিরক্তি প্রকাশ করেছেন’ -সভায় উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জয় ও লেখকের কাছে সাধারণ সম্পাদক জানতে চেয়েছেন, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ, বিভিন্ন জেলায় প্রেস রিলিজ কমিটি গঠন নিয়ে কেন বিতর্ক উঠছে, কেন কেন্দ্র ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরতে পারছে না?

এমন প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, তারা সমাধানের চেষ্টা করছেন। কেন্দ্রের কিছু নেতা ঝামেলা করছেন। ওই সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কমিটিতে কেন বিতর্কিত লোক আসবে? দেখেশুনে কেন কমিটি দেয়া হয়নি? জেলায় জেলায় কোন্দল কেন তোমরা সামাল দিতে পারছ না? কথা বলে এসব ঠিক করতে পার না? দুজন মিলে জেলায় জেলায় কথা বল। প্রয়োজনে ঢাকায় ডেকে আনো তাদের। সংগঠন এভাবে চলতে পারে না। ছাত্রলীগকে এ মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনো ঝামেলায় জড়ানো যাবে না।’ সম্মেলন নিয়ে তিনি বলেন, ‘নেত্রী এসে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করবেন।’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, দলের নির্দেশ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কেউ যদি বিএনপির সভা-সমাবেশে হামলায় জড়ায় তাদের ছাড় দেয়া হবে না। আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বলছি, নেত্রীর (শেখ হাসিনা) নির্দেশের বাইরে গিয়ে কেউ যদি হামলায় জড়িয়ে পড়ে, তাদের ছাড় দেয়া হবে না। এসব করলে সরকারের ওপর এসে দায় পড়বে; এ জন্য কিন্তু আমরা ছাড় দেব না। কোনো খারাপ কাজ আমাদের নেত্রী সহ্য করেন না। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।