রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সাত মাস যেতে না যেতেই সেনা সংকটে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের ঘটনায় বিশ্ব দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন দিক উন্মোচীত হচ্ছে এই যুদ্ধের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে। নতুন খবর হচ্ছে, রাশিয়অ এরইমধ্যে বহু সৈন্য হারিয়েছে। যুদ্ধে ইউক্রেনের পাল্টা জবাবে রাশিয়ার আহতের সংখ্যাও একে বারে কম নয়। আবার কেউ যুদ্ধের ময়দান থেকে পালিয়েছে। সংকটে পড়েছে রাশিয়া সেনা সংখ্যা নিয়ে।

রাশিয়া তাই ভ্রাম্যমাণ বিশেষ ট্রাকের মাধ্যমে সেনা সংগ্রহে নেমেছে। এমন দৃশ্য বিশ্ব মিডিয়াতে প্রচার পেয়েছে। এতে করে ইউক্রেন অবশ্য মানসিক ভাবে অনেকটা শক্তিশালী হয়ে উঠবে। অন্যদিকে রাশিয়া আকর্ষণীয় বেতন আর নানা সুযোগ সুবিধার লোভ দেখিয়ে সামরিক বাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। পশ্চিমা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, অন্তত আশি হাজার রুশ সেনা মারা গেছে যুদ্ধে। আহত হয়েছেন আরও অনেক। আর আত্মসমর্পণ কিংবা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও বহু ঘটেছে। এতেই তৈরি হয়েছে সৈন্য সংকট।

যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ার আরও সৈন্য দরকার। এ কারণেই মোবাইল রিক্রুটিং ট্রাকের মাধ্যমে চলছে সৈন্য সংগ্রহের কাজ। ইউক্রেনে চালানো আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ আখ্যা দিয়ে তিন থেকে ছয় মাসের চুক্তিতে নাগরিকদের সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বেতন ধরা হয়েছে প্রায় তিন হাজার ডলার; যা স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ।

রাশিয়ার সিলেকশন পয়েন্ট ফর মিলিটারি সার্ভিসের প্রধান সের্গেই আরদাসেভ বলেন, ১৮ থেকে ৬০ বছরের রুশ এবং বিদেশি সব নাগরিককেই আমরা মিলিটারি সার্ভিসের জন্য বিবেচনা করছি। অন্তত উচ্চ মাধ্যমিক পাস হলেই আমরা তাকে উপযুক্ত মনে করছি। মূলত দেশপ্রেমী নাগরিকদের নির্বাচন করা হচ্ছে। বিশেষ সামরিক অভিযানের জন্য তিন থেকে ছয় মাসের জন্য তাদের সাথে চুক্তি করা হবে। আগ্রহীদের প্রথমে মানসিক পরীক্ষা দিতে হবে। পরে তিন ধাপে হবে শারীরিক পরীক্ষা।

এরইমধ্যে অনেক রুশ নাগরিকই সাড়া দিয়েছে সরকারের এ আহ্বানে। ভিক্টর ইয়াকুনিন নামের এক সেনা নিয়োগ প্রার্থী বলেন, শৈশব থেকে, সেনাবাহিনীতে কাজ করার স্বপ্ন ছিল আমার। বর্তমানে আমি একজন মিউজিশিয়ান। তবে, এখন রুশ সশস্ত্র বাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক এ কাজ করতে আগ্রহী আমি। এরইমধ্যে কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি। ছোটবেলা থেকেই আমার বাবা-মা জন্মভূমিকে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন। যদিও, সৈন্য সংকটের বিষয়টি সরাসরি স্বীকার করেনি ক্রেমলিন।

সূত্র : আল জাজিরা