সুজা তালুকদার চট্টগ্রাম থেকে
নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর, নারায়ে রিসালত ইয়া রাসুলাল্লাহ, হামদ, নাত, দরুদে মুখরিত আজ চট্টগ্রাম মহানগরীর এলাকা কম্পিত ছিল। করোনার কারণে দুই বছর পর চট্টগ্রামে জমকালো ‘জুলুস’ আয়োজন হলো।
জুলুস ও আশপাশের এলাকায় ছিল লাখ লাখ মানুষ। লাখো মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর (স) জশনে জুলুস। রোববার (৯ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর ষোলশহরের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ-এ-কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে জুলুস শুরু হয়। জুলুস শেষে দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত হয় মাহফিল। এরপর জোহরের নামাজ শেষে দোয়া ও আখেরি মোনাজাত করা হয়।
জুলুস শুরুর আগে হুজুর কেবলা আলমগীর খানকাহে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় করোনা মহামারি থেকে মুক্তি ও বিশ্ব শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।
জুলুসে অংশ নিতে ভোর থেকে নবীপ্রেমী মানুষ জড়ো হতে থাকেন ষোলশহরের জামেয়া মাদ্রাসা মাঠ ও আশপাশের এলাকায়। জুলুসের রোডম্যাপের মোড়ে মোড়ে অপেক্ষা করেন স্বেচ্ছাসেবক ও হুজুর কেবলার ভক্তরা। জুলুসকে ঘিরে মুরাদপুর, বিবিরহাট, মাদ্রাসা এলাকায় শত শত টুপি, মাস্ক, আতর, সুরমা, তসবিহ, পাঞ্জাবি, ইসলামি বই, খাবার দোকান বসেছে।
করোনা মহামারিতে দুই বছর সীমিত পরিসরে হয়েছিল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী (স.)। এবার হিজরি বর্ষ অনুযায়ী জুলুসের ৫০তম আয়োজন। তাই
জুলুসকে ঘিরে চট্টগ্রাম সেজেছে বর্ণিল সাজে। হুজুর কেবলার জন্য বিশেষভাবে সাজানো গাড়িতে আছেন আনজুমান এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শামসুদ্দিন, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান প্রমুখ।
গাউসিয়া কমিটি, আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন তোরণ, সড়কদ্বীপ, সড়ক বিভাজক সাজিয়েছে। জুলুসের মেহমানদের শরবত, চকলেট, খেজুর, জিলাপি, জুস বিতরণ করছেন অনেক ভক্ত। নারী, শিশুরা বিভিন্ন ভবনের ছাদ, জানালা দিয়ে স্বাগত জানান জুলুসকে।
গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বাংলানিউজকে বলেন, জুলুসে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার জন্য আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের (এএসএফ) তিন হাজার, গাউসিয়া কমিটির নেতা-কর্মী ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্র মিলে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন। যথারীতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। জুলুস শেষে দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে মাহফিল। এরপর জোহরের নামাজ শেষে দোয়া ও আখেরি মোনাজাত করা হয়।
