এই ফুটবল শৈলীর জন্যই বিশ্বজুড়ে ব্রাজিল ফুটবল দলের কোটি কোটি ভক্ত। উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে তারা ফের একবার দেখিয়েছে নান্দনিক রুপে ফুটবলটা তাদের চেয়ে ভালো আর কেউ খেলতে পারে না। পাস-পজিশন-আক্রমণের দারুণ মুন্সিয়ানায় আজ দ্বিতীয় রাউন্ডের লড়াইয়ে তারা উত্তর কোরিয়াকে হারিয়েছে হেসেখেলে।প্রথমার্ধেই চারবার কোরিয়ার জালে বল পাঠিয়ে ম্যাচের গতিপথ একরকম ঠিক করে ফেলে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। শেষ পর্যন্ত ৪-১ ব্যবধানে ম্যাচটি জিতে শেষ আটে উঠে গেছে তিতের দল।

চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোতে উঠলেও গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে ব্রাজিলের নিজেদের সেরাটা দিতে পারেনি।প্রথম দুই ম্যাচে জিতেছিল অনেক কষ্টে।গ্রুপের শেষ ম্যাচে তক্যামেরুনের কাছে হেরেই গেল

সব মিলিয়ে আজ ব্রাজিল নিজেদের সেরা রুপে ফিরতে মুখিয়ে ছিল।স্টেডিয়াম ৯৭৪ এ এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় ব্রাজিল। শৈল্পিক সব আক্রমণে তারা ম্যাচের প্রথম ত্রিশ মিনিটে কোরিয়ার রক্ষণভাগ ভেঙে চুরমার করে দেয়।

আসলে প্রথমার্ধে প্রতি মিনিটে নেইমারদের খেলা নিয়ে আলাদা গল্প লেখা যাবে।প্রথম তিন মিনিটে ভালো দুটি আক্রমণ করলেও প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভেঙে বক্সে ঢুকতে পারেনি ব্রাজিল। তবে নেইমার-রিচার্লিসনরা যেভাবে ক্ষণে ক্ষণে কোরিয়ার রক্ষণভাগে হানা দিচ্ছিল তাতে গোল পাওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার।

ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটের মাথায় ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস জুনিয়র। বাই লাইন থেকে রাফিনিয়ার বাড়ানো পাস ডি বক্সে ফাঁকা জায়গায় পেয়ে ডান পায়ের মাপা শটে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক আর ডিফেন্ডারদের পরাস্ত করে খুজে নেন।এর মিনিট ছয়েক পরেই পেনাল্টি থেকে ব্যবধান দিগুণ করেন নেইমার।নিজেদের অর্ধে রিচার্লিসনকে কোরিয়ার জং য়ু-ইয়ং ফাউল করলে পেনাল্টিটি পায় ব্রাজিল। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে নেইমারের করা সর্বশেষ ছয়টি গোলের সবকটি এসেছে স্পট কিক থেকে!

১৭ তম মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণে যায় কোরিয়া।তবে আলিসনের দৃঢ়তায় পায়নি গোলের দেখা। তবে ব্রাজিলের এদিন থামার কোন চিন্তাই ছিল না। ২-০ গোলে এগিয়ে থাকার পরও তারা আক্রমণ বজায় রাখে।২৯ তম তৃতীয় গোলের দেখা পেয়ে যায় সেলেসাওরা। রিচার্লিসনের করা সেই গোলটি খুব সম্ভবত আসরের অন্যতম সুন্দর গোল।কোরিয়ান বক্সে মাথা ও পায়ের কারুকাজ দেখিয়ে বল বাড়ান মারকিনিওসের দিকে। পরে থিয়াগো সিলভার পা ঘুরে রিচার্লিসন বক্সের কাছাকাছি বল। এরপর বা পায়ে তার নেওয়ার নিখুঁত শটটির সামনে কোরিয়ান গোলরক্ষক ছিলেন অসহায়।৩-০ গোলে এগিয়ে ততক্ষণে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে ফেলেছে তিতের দল। তবে এদিন যেন গোলের নেশা পেয়ে বসেছিল পাচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। ৩৬ তম মিনিটে টোটাল টিমওয়ার্কে স্কোরলাইন ৪-০ করেন পাকেতা।

প্রথমার্ধেই মূল কাজটা সেরে ফেলায় কিনা দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলের আক্রমণের ধার কমে আসে।ফলে চাপ কিছুটা কমায় পাল্টা আক্রমণে যায়।৭৬ তম মিনিটে দারুণ এক গোলে ব্যবধান কমায় এশিয়ার দেশটি।ফ্রি কিকে উড়ে আসা বল প্রথম দফায় ব্রাজিলের রক্ষণ হেডে ক্লিয়ার করলেও বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান সিউং-হো। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত শটে গোলটি করেন এই মিডফিল্ডার। বাকি সময়টাতে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ হলেও গোলের দেখা পায়নি কোন দল।

সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আগামী শুক্রবার এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল।