বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) জলবায়ু পরিবর্তনের উপর এক সেমিনার বুধবার অনুষ্ঠিত হয়। ওপেন স্কুল আয়োজিত এ সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্রের লুসিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. ক্যারোল এ. উইলসন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে বাউবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ূন আক্তার, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. নাসিম বানু, প্রো উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিন ও রেজিস্ট্রার ড. মহা. শফিকুল আলমসহ ডিন, বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। ওপেন স্কুলের শিক্ষক ড. মোঃ মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ওপেন স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. সাবিনা ইয়াসমিন সমাপনী বক্তব্য রাখেন। বাউবির প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক এবং কর্মকর্তাগণ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারে ড. ক্যারোল এ. উইলসন তাঁর বক্তব্যে ‘নদী প্রবাহের কারণে উপকুলে প্রাকৃতিকভাবে জমাকৃত পলিমাটি এবং বাঁধের ভিতরে জমাকৃত পলিমাটির মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। দেখা গেছে জুন-সেপ্টেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি পলি জমে, অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে অপেক্ষাকৃত কম পলি জমে। ২০১৭ সালে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে সুন্দরবন এলাকায় প্রচুর পলি জমে যা বিগত বছরের চেয়ে প্রায় ৪০-৭০% বেশি। বিগত কয়েক দশক ধরে, অপরিকল্পিত বন্যার বাঁধ নির্মাণের ফলে ব-দ্বীপের নৃতাত্ত্বিক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ভূ-পৃষ্ঠে পলি জমছে, উপক’লে লবন পানির প্রভাব ও বনাঞ্চলে এই পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাল্টে দিচ্ছে জীবনযাত্রাকে। সুন্দরবনে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের উপর এর প্রভাব মারাত্মকরূপ নিতে পারে। মানব তৈরি বাঁধ সুন্দরবনকে হুমকির মধ্যে ফেলছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশের বিপর্যয় মোকাবেলায় তিনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন।

বাউবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ূন আক্তার সেমিনারে তথ্যবহুল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের জন্য ড. কেরল কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান । এসময় তিনি লুচিয়ানা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাউবি’র অংশীদারী গবেষণা প্রকল্পের দাবি করেন ।

উল্লেখ্য, ড. ক্যারোল এ. উইলসন ইতোপূর্বে ‘বাংলা-পিআইআরই’ এবং ‘জলবায়ু তারতম্যের কারণে বাংলাদেশের সামাজিক ও পরিবেশের পরিবর্তন’ শীর্ষক দুটি গবেষণা প্রকল্প সম্পন্ন করেন। তিনি জোয়ার ভাটার সঙ্গে সম্পৃক্ত নদী-নালা এবং উপক’লীয় বনভূমিতে- পলি, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এবং পানির গুণগত মান নিয়ে গবেষণা করেছেন।