গাজীপুরে বড় মাপের সাংবাদিক পরিচয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে টাকা দাবী করায় নারীসহ ৫ প্রতারককে কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় তাদের অর্থদন্ডও করা হয়। এ যেন পড়বি তো পড় বাঘের ঘাড়ে। মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের কালীগঞ্জে উপজেলা ভ’মি অফিসে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ’মি) এর অফিসে একটি মাইক্রোবাস যোগে আসেন নারীসহ ৫জন প্রতারক। তাদের সঙ্গে বিটিভি সহ বিভিন্ন মিডিয়া হাউজের স্টিকার, ভিজিটিং কার্ড, বুম ছিল। পরে তারা নিজেদের বড় মাপের সাংবাদিক পরিচয়ে ওই কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাত করে আর্থিক সুবিধা দাবি করেন। তিনি তাতে রাজি না হলে সবশেষে তারা দূর থেকে এসেছেন তাই গাড়ীর তেল খরচ ও দুপুরের খাবারের জন্য অর্থ দাবি করেন। এতে বিষয়টি সন্দেহ হলে ওই কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট মিডিয়া হাউজ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাতে সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ওই ৫জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার প্রমাণ পাওয়া যায়। এসময় তাদেরকে আটক করে অফিসের কর্মচারী ও স্থানীয়রা। আটককৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন মিডিয়ার কার্ড, বুম ও বিটিভি’র স্টিকারযুক্ত তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়।

বিকেলে গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ’মি) উম্মে হাফছা নাদিয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। আদালত আটককৃত ৫জনের প্রত্যেককে ৩মাসের করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এসময় তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরো ১৫দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ’মি) উম্মে হাফছা নাদিয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ’মি) উম্মে হাফছা নাদিয়া বলেন, গণ উপদ্রব দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৯১ ধারায় ওই দন্ড প্রদান করা হয়। এর আগেও তারা একাধিকবার এ অফিসে এসে টাকা দাবী করেছিল।

দন্ডপ্রাপ্তরা হলো- নেত্রকোনা জেলার সদর এলাকার মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মনিরুজ্জামান (৫৪)। তিনি নিজেকে বিটিভির খোঁজ খবর অনুষ্ঠান ও সাপ্তাহিক এশিয়া বার্তার সাব-এডিটরের পরিচয় দেন। গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানাধীন করমতলা এলাকার বাহার আলী দেওয়ানের ছেলে মাজহারুল ইসলাম দেওয়ান ওরফে অনিক (২৪)। তিনি নিজেকে দৈনিক আজকের আলোকিত সকালের ক্রাইম রিপোর্টারের পরিচয় দেন। একই পত্রিকার ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি পরিচয় দেন টঙ্গী আরিচপুর এলাকার বাচ্চু সরকারের ছেলে নাজমুল ইসলাম সেলিম সরকার (৩৪) ও টঙ্গী এরশাদনগর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে কামরুজ্জামান (২৪)। এছাড়াও একই পত্রিকার রিপোর্টার পরিচয় দেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সোয়াইবপুর গ্রামের ফখরুল ইসলামের মেয়ে রোজিনা আক্তার (১৯)।

এদিকে রায় ঘোষণাকালে আদালতের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করেন সাপ্তাহিক এশিয়া বার্তার সাব এডিটর পরিচয়দানকারী মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, স্থানীয় এক টেলিভিশন সাংবাদিকের আমন্ত্রণে তারা ওই অফিসে আসেন।