বেতন বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা ও রওশন সড়ক এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলনের জেরে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, জরুন, চান্দনা ও ভোগরা এলাকায় ৫০টির বেশি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। গত ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় মজুরি বাড়ানোর দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে আসছেন। এরপর নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করে সরকার। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় লিবাস নিটওয়্যার, হাসান তানভীর ফ্যাশনসহ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকরা ঢাকা-জয়দেবপুর সড়ক অবরোধ করে। পরে পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
একপর্যায়ে শ্রমিকরা নাওজোড় এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে, রাস্তার ওপর কাঠ ও বাঁশ ফেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বাসন থানার পুলিশ, র্যাব ও শিল্প পুলিশ। তাদের সঙ্গে শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ সময় শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে।
পুলিশও শ্রমিকদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। খবর পেয়ে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট মহাসড়কে ধরিয়ে দেওয়া আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া নাওজোড় থেকে ভাঙ্গা ব্রিজ এলাকায় সড়কে শ্রমিকেরা বিভিন্ন কারখানায় ঢিল ছুড়ে ভাঙচুর করে।
সকালে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, শ্রমিক আন্দোলনের কারণে কোনাবাড়ী জরুন, চান্দনা ও ভোগরা এলাকার অর্ধশতাধিক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহম্মেদ বলেন, সকালে চান্দনা এলাকায় একটি কারখানায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করলে তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে নাওজোড়সহ আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা ভাঙচুর করেন। আগুন ধরিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন।
এদিকে গতকাল বুধবার শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আনজুমান আরা বেগম নামের এক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় কোনাবাড়ী এলাকার সব শিল্পকারখানা আজ বৃহস্পতিবার বন্ধ রয়েছে। তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে পুলিশ র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা টহল দিচ্ছেন