এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের তদন্তে প্রাথমিক ভাবে সত্যতা পাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নুরুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারী) রাতে সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই শিক্ষককে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেন।
জানাযায়, গত ২৮ নভেম্বর উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের কাছে বিচার চেয়ে আবেদন করেন ঢা‘বি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রী। ছাত্রী অভিযোগ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম তাকে যৌন হয়রানি করেছে। পরদিন দুপুরে ওই ছাত্রীর সহপাঠীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে উপাচার্যকে একটি স্মারকলিপি দেন। এরপর ৩০ নভেম্বর সিন্ডিকেট অভিযোগ তদন্তে তথ্যানুসন্ধান কমিটি করে। আইন অনুষদের ডিন সীমা জামানকে প্রধান করে গঠিত এই কমিটির সদস্য হিসেবে ছিলেন সিন্ডিকেট সদস্য আবুল মনসুর আহাম্মদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সঞ্চিতা গুহ।
তদন্ত কমিটি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রাথমিকভাবে সত্যতা পান।

একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য সংবাদমাধ্যমকে জানান, সিন্ডিকেটের সভায় তথ্যানুসন্ধান কমিটি তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। প্রতিবেদনে অধ্যাপক নুরুলের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। সিন্ডিকেট বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে পাঠিয়েছে ৷ সেলকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এই সময়ে অধ্যাপক নুরুলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য এর আগে গত বছরের জানুয়ারি এবং ২০১৪ সালের মে মাসে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে পৃথক দুই ছাত্রী যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনেন । রহস্যজনক কারণে দুই বারই তিনি পার পেয়ে যান। এবারও কি হবেন তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেই চলছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে গত এক বছরে প্রায় ২০ টি যৌন হয়রানির ঘটনার অভিযোগ কর্তৃপক্ষ পেয়েছেন। এ সংখ্যা বেশি দাবী করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সুত্র জানান, হয়রানির শিকার হবার পরেও লোকলজ্জার ভয়ে অনেক শিক্ষার্থীই ঘটনা চেপে যান, মুখ খোলেন না, অভিযোগ করেন না লোক লজ্জার ভয়ে। যে ঘটনাটি লোক জেনে যায় কেবল সেটাই অভিযোগ এবং আন্দোলন সংগ্রাম করে শিক্ষার্থীর।