উগ্রবাদী গোষ্ঠী আইএসে যোগ দেয়া বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের বিপক্ষে করা আপিল খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের আদালত।
শুক্রবার আপিল আদালত রায় দেয় যে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে।
আদালতের এই আদেশের অর্থ ২৪ বছর বয়সী শামীমাকে বর্তমানে থাকা সিরিয়ার শরণার্থী শিবিরেই থাকতে হবে। তার যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই।
আদালত বলেছে, এটি যুক্তি দেয়া যেতে পারে যে শামীমার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত ‘কঠোর’ হয়েছে, তবে এটিও যুক্তি দেয়া যেতে পারে যে শামীমা ‘নিজেই তার দুর্ভাগ্যের লেখক’।
‘তবে এটা আদালতের তর্কের বিষয় নয়। আমাদের একমাত্র কাজ হলো দেখা যে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার বিষয়টি আইনসিদ্ধ ছিল কিনা। আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে, এটা তা ছিল না। এবং তার আপিল বাতিল করা হলো।’
শামীমার পরিবার বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত। ২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি তার স্কুলের দুই বন্ধুর সাথে সিরিয়ায় যেতে পূর্ব লন্ডনের বাসা ছাড়েন। পরে সিরিয়ায় গিয়ে আইএসের এক যোদ্ধাকে বিয়ে করেন শামীমা। সেখানে তার তিনটি সন্তান হয়। তবে সন্তানেরা কেউ বেঁচে নেই।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে শামীমাকে সিরিয়ার একটি শরণার্থীশিবিরে পাওয়া যায়। এ সময় তিনি জানান, ওই সময়কার ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেন। এতে তিনি (শামীমা) রাষ্ট্রহীন অবস্থায় পড়েছেন।
পরের বছর ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের একটি ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে বলেন, শামীমা রাষ্ট্রহীন অবস্থায় নেই। কেননা, তিনি ‘বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন নাগরিক’। তার মা একজন বাংলাদেশী।
গত বছর শামীমা যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিল কমিশনে (এসআইএসি) ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হেরে যান। কমিশন বলেছে, শামীমাকে উগ্রবাদী সংগঠনটিতে নিয়োগ দিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে নিয়ে যাওয়া ও পরে যৌন নির্যাতনের জন্য সিরিয়ায় রেখে দেয়ার বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য সন্দেহ রয়েছে। তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাভিদ তার নাগরিকত্ব কেড়ে না নিয়ে পারেননি।
এ আদেশের ফলে শামীমা বেগম সিরিয়ায় শরণার্থীশিবির থেকে যুক্তরাজ্যে নিজ বাড়িতে ফিরতে পারেননি।
সূত্র : আলজাজিরা, এএফপি