পাবনায় পেঁয়াজের বাম্পার ফল হলেও ঝাঁঝ ছিলো প্রখর। স্বল সময়ের ব্যবধানে পেঁয়াজের ঝাঁঝ কমে যাওয়ায় স্বস্তির নি:শ^াষ ফেলছে ভোক্তারা।
মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে উত্তরাঞ্চলের পিঁয়াজের ভা-ার হিসেবে খ্যাত পাবনার বিভিন্ন হাট-বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে মণ প্রতি ১৪ থেকে ১৫শ’ টাকা। এতে ভোক্তাদের মাঝে স্বস্তি দেখা দিলেও পেঁয়াজ চাষীরা ক্ষব্ধ হয়েছেন।

জেলার সবচেয়ে পেঁয়াজ আবাদ হিসেবে খ্যাত অঞ্চল সুজাননগর উপজেলা। আটঘরিয়া, চাটমোহরের বিভিন্ন গ্রামেও পেঁয়াজ কমেবেিশ আবাদ হয়। এবারে সবখানেই পেঁঁয়াজের ফলণ খুব ভাল হয়েছে। আবাদের পর ফলণে খুশি হয়েছেন চাষীরা। খোলা বাজারে খুচরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে আকৃতি ও মাণ অনুযায়ী ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

গত মৌসুমে বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতিমণ পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৩৪শ’ টাকা থেকে ৩৫শ’ টাকা দরে। এ সময় হাট-বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে।

স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এবারে অধিকাংশ হাট-বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা দরে। এ হিসেবে প্রতিমণ পেঁয়াজের দাম কমেছে ১৪শ’ থেকে থেকে ১৫শ’ টাকা। আর বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। হাট-বাজারে পেঁয়াজ ক্রেতাদের সহনীয় হলেও খুশি হতে পারছেন না চাষীরা।
সুজানগর উপজেলার মানিকহাট গ্রামের হবিবর রহমান মাস্টার বলেন পেঁয়াজের বর্তমান বাজার স্বাভাবিক এবং সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। তবে উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষী কামরুল ইসলাম বলেন উৎপাদন খরচ অনুযায়ী প্রতিমণ পেঁয়াজ কম পক্ষে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি করা প্রয়োজন।

অন্যথায় কৃষকের তেমন লাভ হয় না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম বলেন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির খবরে দ্রুত দর পতন ঘটেছে। বর্তমানে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক এবং স্থিতিশীল থাকায় খুব ভাল লাগছে। কৃষকদের তথ্যানুযায়ী প্রতি বিঘা জমিতে ৫০ থেকে ৭০ মন পিঁয়াজের ফলন পাওয়া যায়। একাধিক কৃষিবিদের মতে, আবাদ ফলন ভালো হলে কেন কৃষকদের খরচ পোষায় না বিষয়টি আমাদের মানতে কষ্ট হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামারবাড়ী) উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী জানান, এ বছর পেঁয়াজ আবাদের লক্ষমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৫৩ হাজার ২শ’ ৭৫ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৫২ হাজার ৬শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে। আবাদকৃত জমিতে উৎপাদন হয়েছে ৭ লাখ ৬৪ হাজার৬শ’ ৯৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজ। কন্ডা ও চারা মিলে এ পর্যন্ত ২৪% কাটা হয়েছে।