স্বস্তির জয় পেল বাংলাদেশ, তবে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হয়েছে আজ। তৃতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিতে পারেনি, লড়াই করেই জিততে হয়েছে। তবে সিরিজ জয় আটকে থাকেনি, ৯ রানের জয়ে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ।
পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে আজ মঙ্গলবার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৬৫ রান তোলে স্বাগতিকরা। জবাবে ৯ উইকেটে ১৫৬ তোলে জিম্বাবুয়ে।
১৬৬ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন সাইফ, ফেরান জয়লর্ড গাম্বেকে ৯ রানে। পরের আঘাত আনেন সিরিজে প্রথম সুযোগ পাওয়া তানজিম সাকিব, তার শিকার তিনে নামা বেনেট (৫)।
পাওয়ার প্লে শেষ করার আগে আরো একটা উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। এবারও শিকারী সাইফ, ফেরান ক্রেইগ আরভিনকে মাত্র ৭ রানে। এক ওভার পর রিশাদ হোসেনের শিকার হন সিকান্দার রাজা। ১ রানে ফেরেন তিনি।
৮ ওভারে ৪৮ রানে ৪ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়েকে আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দেয়নি বাংলাদেশ। থিতু হয়ে যাওয়া ওপেনার মারুমানিকে ফেরান মাহমুদউল্লাহ। ২৬ বলে ৩১ করে ফেরেন তিনি। এরপর দ্রুত আরো তিন উইকেট হারায় সফরকারীরা।
১৪.১ ওভারে ৯৮ রানে ৮ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তবে যখন মনে হচ্ছিল তাদের গুটিয়ে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা, তখন ফারাজ আকরাম দেখা দেন ভিন্ন রূপে। এই পেসার ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন। ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে নিয়ে গড়েন ৩০ বলে ৫৪ রানের জুটি।
শেষ ওভারে ২১ রান প্রয়োজন হয় জিম্বাবুয়ের। ওয়েলিংটন এই ওভারে ১৩ রানে ফিরলেও ১১ রান তোলে সফরকারীরা। তবে জয়ের জন্য তা যথেষ্ট হয়নি। ১৯ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন ফারাজ। বল হাতে সাইফুদ্দীন ৩ ও রিশাদ নেন ২ উইকেট।
এর আগে, আশানুরূপ শুরু পায়নি বাংলাদেশও। প্রথম ১১ ওভার থেকে ৩ উইকেট হারিয়ে আসে ৭০ রান। থিতু হতে পারেননি টপঅর্ডারের কেউ। লিটন দাস, তানজিদ তামিম বা নাজমুল হোসেন শান্ত সবাই করেন হতাশ।
উইকেটে যেন মন বসছিল না লিটনের। শুরু থেকেই করছিলেন হাঁসফাঁস। বল ব্যাটে না এলেও বারবার তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে যাচ্ছিলেন। তবে তাকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করাননি মুজারাবানি। চতুর্থ ওভারেই দেখান সাজঘরের পথ।
ব্যর্থতার বৃত্ত তাই আজও ভাঙা হলো না লিটনের। প্রথম দুই ম্যাচের মতোই করেন হতাশ। আউট হন ১৫ বলে ১২ রানে। তিনে নেমে শান্ত ফেরেন পরের ওভারেই। সিকান্দার রাজাকে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্প ভাঙেন ৪ বলে ৫ রানে। তাতে ৪.৪ ওভারে ২৯ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
তবে পরিস্থিতি সামলে নেয়ার চেষ্টা করেন তাওহীদ হৃদয় ও তানজিম সাকিব। যদিও জুটি বড় হয়নি তাদের, ২৬ বলে যোগ করেন ৩১ রান। হৃদয়কে রেখে তামিম ফেরেন থিতু হয়ে, ২২ বলে ২১ রানে। মাদেন্দাকে সীমানায় ক্যাচ দেন তিনি।
পরে জাকের আলিকে সাথে নিয়ে বিপর্যয় সামলে উঠেন হৃদয়। দুজনে গড়েন পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটি। জাকের আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেও হৃদয় তুলে নেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ফিফটি। ১৬তম ম্যাচে ৩৪ বল খেলে এই মাইলফলকে পৌঁছান তিনি।
ইনিংসটা এরপর আর খুব বেশি বড় করতে পারলেন না হৃদয়। ১৮তম ওভারে ফিফটি হাঁকানো এই ব্যাটার ফেরেন পরের ওভারেই। মুজারাবানির শিকার হবার আগে করেন ৩৭ বলে ৫৭ রান।
তাতে ভাঙে জাকের আলির সাথে তার ৫৮ বলে ৮৭ রানের জুটি। জাকেরও অবশ্য ফেরেন একই ওভারে, এক বল পরেই। ৩৪ বলে ৪৪ রানে শেষ হয় তার ইনিংস। টসে হেরে আগে ব্যাট করা বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৯ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ১৪৮ রান।
তবে শেষ ওভারে রিশাদ-মাহমুদউল্লাহ মিলে তিনটা বাউন্ডারি আদায় করে নিলে দেড় শ’ পেরিয়ে ভালো একটা পুঁজি পায় বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ৯ ও রিশাদ অপরাজিত থাকেন ৬ রানে। মুজারাবানি নেন ৩ উইকেট।