যুক্তরাজ্যের এফসিডিও’র ইন্দো-প্যাসিফিক প্রতিমন্ত্রী অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ান এমপি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

বুধবার (৮ মে) দুপুরে পররষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিমন্ত্রী।

সাক্ষাৎকালে দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি ছিল পাকিস্তানি বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পরপরই ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রথম ঐতিহাসিক সফরের কথা স্মরণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী ঢাকার ট্রাফিক পরিস্থিতির উন্নতি এবং মেট্রোরেল, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল ও এক্সপ্রেসওয়ের মতো মেগা অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটি এবং রেস্তোরা ব্যবসাসহ বিভিন্ন খাতে তাদের উদ্যোক্তা প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

২০২৬ সালে এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে বাংলাদেশের আসন্ন উত্তরণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং এই অর্থনৈতিক রূপান্তরকালীন ও পরে তার সরকারের সহযোগিতার আশ্বাস দেন অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ান।

তিনি রোহিঙ্গাদের উদারভাবে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন এবং সাম্প্রতিক ১ কোটি ২০ লাখ পাউন্ডসহ এ বিষয়ে অব্যাহত ব্রিটিশ রাজনৈতিক ও আর্থিক সহায়তার নিশ্চয়তা দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত বছর দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণে সন্তোষ প্রকাশ করেন, যা গত বছর ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাজ্য সরকারকে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সমর্থন এবং ২০২৩ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ এফডিআই উৎস হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী টেকসই উত্তরণে সহায়তার জন্য ২০৩২ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের বাজারে তৈরি পোশাকসহ রফতানিযোগ্য বাংলাদেশী পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক ও শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকা দেয়ার অনুরোধ জানান। তিনি ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রীকে জানান যে, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই লক্ষ্য অর্জনে সৌর, বায়ু, জলবিদ্যুৎ, বর্জ্য থেকে জ্বালানি ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শুরু করেছে। জলবায়ু মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের মধ্যেই এই দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান রয়েছে উল্লেখ করে এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের সক্রিয় রাজনৈতিক সমর্থনের জন্য ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান ড. হাছান মাহমুদ।

দুই মন্ত্রী অভিবাসন ও দক্ষতা উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করা, গ্রামীণ উন্নয়ন, জলবায়ু ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ, গ্রিন এনার্জি, বিমান চলাচল, প্রতিরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।