জিম্মি করার পর দস্যুরা প্রথমে আমাদের ওপর অনেক অত্যাচার করত। তবে যখন দেখেছে আমরা নিয়মিত নামাজ পড়ছি, রোজা রাখছি তখন তাদের মন নরম হয়। এরপর থেকে তারা আমাদের ওপর অত্যাচার কম করেছে।’ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ার অভিজ্ঞতা জানিয়ে এমনটা বলছিলেন এমভি আবদুল্লাহর নাবিক (ওএস) জয় মাহমুদ।
আজ বুধবার সকালে জয় মাহমুদ তার গ্রামের বাড়ি নাটোরর বাগাতিপাড়ার উপজেলার সালাইনগর দক্ষিণপাড়ায় ফিরে আসে। এ সময় পরিবার স্বজনরা ও প্রতিবেশীরা তার বাড়িতে ভিড় করতে থাকে জয় মাহমুদকে এক পলক দেখতে। এ সময় আবেগে আপ্লুত হয়ে হাসি আনন্দে মেতে উঠে সকলেই।
জয় মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের যখন জিম্মি করে ছিল তখন আমরা ভাবিনি বেঁচে ফিরব। তবে আস্তে আস্তে তারা যখন স্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে তখন মনে একটু সাহস পাই আমরা। বন্দুকের নলের নিচে আমদের থাকতে হয়েছে। ৩৩ দিন ৩৩ বছর মনে হয়েছে। প্রতিটি দিন ছিল কষ্টের। এবার ঈদের আনন্দ ছিল না। ঈদের দিন ঈদ মনে হয়নি। ঈদে শুধু নামায পড়তে পেরেছিলাম আর কিছুই করতে পারিনি। এখন বাড়ি ফিরতে পেরে খুব আনন্দ লাগছে।’
জয়ের মা আরিফা বেগম বলেন, ‘আমার বুকের মানিক আমার বুকে ফিরে এসেছে। এর থেকে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। আল্লাহ যে ফিরাই দিছে এই জন্য তার দরবারে লাখ লাখ শুকরিয়া। ঈদ আমদের কাছে ঈদ মনে হয় নি। তবে ছেলে বাড়ি ফিরাতে আমাদের এখন ঈদের দিন মনে হচ্ছে।’
জয়ের বাবা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমার ছেলে আজ সকালে বাড়ি ফিরেছে। আমরা খুব আনন্দিত। আমরা প্রধানমন্ত্রী, দেশবাসী, জাহাজ কর্তৃপক্ষ, মিডিয়াকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।’
জয়ের দাদি বলেন, ‘আমার নাতি বাড়ি ফিরে আসছে তাই আমার মনে শান্তি পাচ্ছি। কত যে কান্দিচি তা বলে বুঝানো যাবে না ‘
জয়ের সহপাঠীরা বলেন,‘জয় সুস্থভাবে বাড়ি ফিরে আসাতে আমরা খুবই আনন্দিত।’
এর আগে গত ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হন বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ জন নাবিক। এর মধ্যে জয় মাহমুদ একজন।