ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে এর আগেও দুবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। প্রথমবার জাতীয় নির্বাচনের আগে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছিল। তখন তারা ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয় বারও ব্যর্থ হয় আক্তারুজ্জামান শাহীন ও আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া। সেবার চলতি বছরের ১৭ থেকে ১৮ জানুয়ারি আনোয়ারুল কলাকাতায় যান। সেই সময়ে হত্যাকারীরাও তাকে খুনের উদ্দেশ্যে কলকাতায় যান। কিন্তু হোটেলে থাকার কারণে সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। তৃতীয় ধাপে তারা এসে সফল হয়।

শনিবার (২৫ মে) রাজধানীতে ডিবির কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

হারুন জানান, হত্যাকাণ্ডের মদতদাতা আক্তারুজ্জামান শাহীন গত ৩০ এপ্রিল তিন জন নিয়ে কলকাতায় যান। সেই দলে একজন নারীও ছিলেন। কিলিং মিশন বাস্তবায়নে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়াকে বুঝিয়ে দিয়ে শাহীন ১০ মে পর্যন্ত কলকাতায় অবস্থান করে দেশে চলে আসেন।

এসময় গ্রেফতারদের কাছ থেকে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়ার কথা জানান হারুন। ভারতীয় পুলিশ এখানে কাজ করছে। তাদের কাজ শেষ হলে ডিবির সদস্যরাও কলকাতায় চলে যাবো।

কী কারণে এমপিকে হত্যা করা হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, এ হত্যার পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। কী কারণে হত্যা সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত শেষে হত্যার মূল কারণ উদঘাটন করা যাবে।

তিনি জানান, আগেও আনোয়ারুলকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগেও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। তখন তারা ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয় বার চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১৭ থেকে ১৮ তারিখ আনোয়ারুল কলাকাতায় যান। সেই সময়ে হত্যাকারীরা তাকে খুনের উদ্দেশ্যে কলকাতায় যান। কিন্তু হোটেলে থাকার কারণে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তৃতীয় ধাপে তারা এসে সফল হয়।

ডিবিপ্রধান জানান, তবে হত্যার আগে তাদের পরিকল্পনা ছিল আনোয়ারুলকে জিম্মি করা। এরপর তারা আপত্তিকর ছবি তুলে দুইদিন ব্ল্যাকমেইল করে হুন্ডির মাধ্যমে এবং কলকাতায় থাকা তার বন্ধুদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কেকের টাকা আদায় করা।

কিন্তু আনার কলকাতার ভাড়া করা ওই ফ্ল্যাটে যাওয়ার পরে তার মুখে ক্লোরোফর্ম (চেতনানাশক) ব্যবহার করায় তিনি জ্ঞান হারান। অজ্ঞান অবস্থায় আনারের আপত্তিকর ছবি তোলা হয়। কিন্তু তাদের মূল টার্গেট ছিল হত্যা করা।

আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে ভারতীয় পুলিশের একটি দল ঢাকায় কাজ করছে। পাশাপাশি আমাদের হাতে গ্রেফতার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা দুটি বিষয় পেয়েছি। দুটি গ্রুপ এখানে কাজ করেছে। একটি গ্রুপ মদত দিয়েছে, আরেকটি গ্রুপ হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নে কাজ করেছে।

স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, নির্দিষ্ট কোনো কিছুই বলা যাবে না। তবে অনেকগুলো বিষয় আছে। তদন্ত শেষ করে আমরা আপনাদের জানাতে পারবো।

হত্যার ঘটনায় কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, কিসের ভিত্তিতে হত্যার কথা বলা হচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, আমরা অনেক তথ্য-প্রমাণ পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করছি না। প্রমাণ পেয়েছি বলেই কলকাতায় হত্যা মামলা হয়েছে। আমাদের দেশে একটি মামলা হয়েছে। কলকাতায় মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। নিশ্চই তারা আলামত পেয়েছে। কলকাতায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার তদন্তে আমারও যাবো।