ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে আজ সারা দেশ বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসের কবলে থাকবে। আজ সোমবার সকাল ৮.১০ মিনিটে জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে কানাডাভিত্তিক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ এ তথ্য জানিয়েছেন।

পলাশ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের ঘূর্ণ্যমান মেঘের বৃত্তের বেশিভাগ অংশ এখনো সমুদ্রের ওপরে অবস্থান করছে। আবহাওয়র পূর্বাভাস মডেলগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে ধারণা করা যায় যে আগামী বুধবার সকাল পর্যন্ত এমন আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে।

১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত অব্যাহত
ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানতে থাকার প্রেক্ষাপটে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ সোমবার ২৭ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তর এই নির্দেশনা দিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, উপকূল অতিক্রমরত রেমাল ক্রমশ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গ, খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম অব্যাহত রেখেছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরো উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে পরবর্তী ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আরো জানিয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।

এতে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর; কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এর আগে বিবিসির খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের সাতক্ষীরা ও পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে বঙ্গোপসাগর উপকূলে আঘাত হেনেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের ‘আই’ (চোখ) বা মূল কেন্দ্রটি। রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা নাগাদ এটি আঘাত হানে, যদিও ওই সময় সাগরে ভাটা থাকায় তেমন বড় কোনো জলোচ্ছ্বাস দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, মোটামুটিভাবে বাংলাদেশ সময় রাত ১১টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশ অর্থাৎ চোখের অংশটি উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করে যাবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রধান ড. শামীম হাসান ভূঁইয়া জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তীব্র বাতাস, জলোচ্ছ্বাস, ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী ও অতিভারী বৃষ্টি এবং বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির মূল কেন্দ্র বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দুটি জায়গা দিয়েই অতিক্রম করছে বলেও জানাচ্ছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘মোংলা থেকে দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চল দিয়ে সাতক্ষীরা ও পশ্চিম বঙ্গের সাগর আইল্যান্ডের মাঝখান দিয়ে ঢুকেছে ঘূর্ণিঝড়ের মূল কেন্দ্রটি। মূল কেন্দ্রের ব্যাসার্ধ অনেক বড় থাকায় এটির প্রভাব আশপাশের এলাকাগুলোতেও পড়তে শুরু করেছে।’

আবহাওয়া অফিস বলছে, ঝড়টির মূল অংশ যখন উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করে তখন নদী ও সাগরে ভাটা থাকার কারণে জলোচ্ছ্বাস কম হয়েছে। তবে, রাত পৌনে ১০টার দিকে উপকূলীয় এলাকায় জোয়ার শুরু হবে।

ঝড়ের শেষ ভাগটি যখন উপকূল অতিক্রম করবে, তখন সাগরে জোয়ার থাকার কারণে উপকূলীয় জেলাগুলোতে জলোচ্ছ্বাস বাড়বে।

রিমালের প্রভাবে কাল সোমবার রাজধানী ঢাকা-সহ সারাদেশে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদফতর। আর ঝড়টি এখনও উপকূল অতিক্রম করছে বলে মোংলা ও পায়রা বন্দরকে ১০ নম্বর, এবং কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৯ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঝড়ের প্রভাবে কুয়াকাটায় জলোচ্ছ্বাসে একজন ও সাতক্ষীরায় আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। আর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মোংলাতে দুপুরে