সৌদি আরবের মিনায় হজযাত্রীদের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। সৌদি সময়ানুযায়ী আজ ১৪ জুন ৮ জিলহজ শুক্রবার সকাল থেকে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই হাজীরা মিনার উদ্দেশে রওনা দেন। বাইতুল্লাহ থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। এ জন্য হজযাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় সৌদি মুয়াল্লিমরা আগের রাত থেকেই হজযাত্রীদের তাঁবুর শহর মিনায় নেয়া শুরু করেন। এশার নামাজের পর মক্কার নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরাম বেঁধে মিনায় রওনা হন হাজীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার পর সারা বিশ্বের ২০ লাখ হজযাত্রীকে পবিত্র মিনায় নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়। এত বিশাল সংখ্যার হজযাত্রীকে স্বল্প সময়ের মধ্যে পবিত্র মক্কা থেকে মিনায় নিয়ে যাওয়া একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব হজযাত্রীকে মিনায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আগেই মিনার ময়দান পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হয়। সেখানে প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ ও নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
বিশ্ব মুসলিমের সবচেয়ে বড় এই জনসমাগম চলাকালে তীব্র গরম থাকতে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছিল সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। চলমান তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও পৌঁছাতে পারে বলে হজযাত্রীদের সতর্ক করেছে দেশটি। এর আগে সৌদি আরবের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছিল, হজের সময় মক্কার তাপমাত্রা ৪৫ থেকে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে।
গতবারও হজের সময় তীব্র গরম ছিল। ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থানকালে অনেকে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এবারো একই ধরনের গরম থাকতে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ আল-আব্দুল আলি বলেছেন, উচ্চ তাপমাত্রা এ বছরের হজ মৌসুমে একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। হজযাত্রীদের গরম থেকে সুরক্ষিত থাকতে তিনি মন্ত্রণালয় নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান। হজের সময় গরম থেকে বাঁচতে ছাতা ব্যবহার, বেশি বেশি পানি পান ও প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হিট স্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন কিংবা ক্লান্ত হয়ে গেলে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩২ হাজার স্বাস্থ্য সেবাকর্মী। রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা।
এ দিকে এবার ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি লোক হজ করছে বলে জানিয়েছেন সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা। আশা করা হচ্ছে, এবার ২০ লাখেরও বেশি মানুষ হজ করবেন।
করোনার প্রথম বছর মাত্র ১০ হাজার সৌদিবাসী হজের অনুমতি পেয়েছিলেন। ২০২১ সালে কিছুটা শিথিল করে ৫৯ হাজার মানুষকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। ২০২২ সালে ৯ লাখ ২৬ হাজার মুসলিম হজ করেন। গত বছর হজ করেন ১৮ লাখের কিছু বেশি মুসলমান।
সৌদিতে এ বছর ১৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। পরের দিন ১৬ জুন সৌদি আরবে ঈদুল আজহা। আর বাংলাদেশে ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে ১৭ জুন।