সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সম্মিলিতভাবে রেলপথ অবরোধ করেছে রাজশাহীর একাধিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ফলে রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা শুক্রবার বিকেল সোয়া ৪টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিকেল ৪টা ৫০মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজার সংলগ্ন রেলপথ অবরোধ করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা রেললাইন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অবরোধ রাখার ঘোষণা দেন।
এর আগে দুপুর সাড়ে ৩ট থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন। পরে বিকেল সোয়া ৪টায় তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড হয়ে, বিভিন্ন হলের সামনে থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজার সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করেন।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা-সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটা পদ্ধতির কবর দে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘আদায় হবে দাবি, পথ দেখাবে রাবি’‘মেধাবীদের কান্না, আর না আর না’, ‘কোটা-বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘মেধাবীদের যাচাই করো, কোটাপদ্ধতি বাতিল করো’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় কোটা পদ্ধতির ঠাঁই নাই’, ‘১৮-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘বৈষম্যর বিরুদ্ধে লড়াই করো একসাথে’ ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন।
আন্দোলনে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, কোটাপদ্ধতি সংস্কারের পক্ষে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি আমাদের রেললাইন অবরোধ করতে বাধ্য করেছে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি যদি আমাদের আরও কঠোর হতে বাধ্য করে, আমরা কঠোর হবো। আমরা আন্দোলনকারীরা সারাদেশে এক দফা দাবি জানিয়েছি। সেটা হলো, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে শুধু কোটাপদ্ধতি সংস্কার নয়, বরং সকল ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করতে হবে।’
আন্দোলনে আসা আরেক শিক্ষার্থী মনিরুল হোসেন বলেন, আমার প্রথম থেকেই চাচ্ছিলাম শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় করতে। কিন্তু যখন আমরা দেখেছি যে আমাদের ভাইদের হামলা করা হয়েছে। এ হামলাকারীদের শীঘ্রই আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এছাড়া আমাদের দাবি যতদিন না মানা হবে, ততদিন আমরা আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাব।