যৌতুকের টাকার জন্য নওগাঁয় স্বামীর দেওয়া আগুনে গৃহবধূ ফজিলাতুন নেছা (২৫) মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ছাত্র সমাজ ও এলাকাবাসীর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
এসময় বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা মানববন্ধনে অংশ নেয়।
ফজিলাতুন নেছা নওগাঁ সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) সদস্য ছিলেন। তিনি সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যেপাড়া গ্রামের গোলাম রাব্বানীর স্ত্রী।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যৌতুকের টাকার জন্য ওই গৃহবধূকে প্রায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্বামী গোলাম রাব্বানী ও তার পরিবারের সদস্যরা। গত ২৭ আগস্ট সকালে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮দিন পর মারা যান ফজিলাতুন নেছা। পরে গৃহবধূর বাবা ফজলুর হোসেন বাদী হয়ে গোলাম রাব্বানীসহ তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ ভুক্তভোগীর স্বামীকে গ্রেফতার করলেও অন্য আসামিরা পলাতক আছেন। তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।
স্বর্ণা খাতুন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, যৌতুকের জন্য স্বামী তার স্ত্রীকে পিটিয়ে এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারবে এটি জঘন্য অপরাধ। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের কঠিন শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
আরেক শিক্ষার্থী জীবননেছা প্রীতি বলেন, আমাদের বোনের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে আর কোনো বোনকে আমরা এভাবে না হারায়। এতদিন আগে মামলা হলেও পুলিশ মাত্র একজনকে গ্রেফতার করেছে। এটি খুবই দুঃখজনক।
নিহত ফজিলাতুন নেছা মা বলেন, যৌতুকের জন্য প্রায় আমার মেয়েকে মারধর করত গোলাম রাব্বানী ও তার পরিবারের সদস্যরা। এর আগে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত আমার মেয়ের শরীরে আগুন ধরিয়ে মেরেই ফেলল। খুব কষ্ট করে আমার মেয়েটা মারা গেছে। আমি এর বিচার চাই।
এব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক কে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পর প্রধান অভিযুক্ত গোলাম রাব্বানীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মোঃ খালেদ বিন ফিরোজ
নওগাঁ প্রতিনিধি