সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করতে শুরু করেছেন দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। এ খবরে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দামেস্ক ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। তবে এমন গুঞ্জনকে অস্বীকার করে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বলেছে, তিনি দামেস্কেই অবস্থান করছেন।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বিবৃতিতে জানায়, বিদ্রোহীরা রাজধানীর দিকে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের চলে যাওয়ার খবর মিথ্যা ও গুজব। তিনি দামেস্কেই আছেন এবং তার দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাচ্ছেন।

এই মিথ্যা খবরের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘কিছু বিদেশি গণমাধ্যমে গুঞ্জন ও ভুয়া খবর ছড়ানো হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট দামেস্ক ছেড়েছেন বা দ্রুত অন্য দেশে চলে গেছেন। কিন্তু তা সত্য নয়। এটি গুজব ও মিথ্যা সংবাদ। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। প্রেসিডেন্ট জাতীয় ও সাংবিধানিক কাজে ব্যস্ত রয়েছেন ও রাজধানী দামেস্কেই আছেন।’

দুই সপ্তাহ আগে আকস্মিকভাবে সিরিয়ায় অভিযান শুরু করে সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও তাদের মিত্র দলগুলো। এতে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে শুরু করে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। বিদ্রোহীরা একে একে আলেপ্পো, হামা ও হোমসের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর তারা দামেস্কের দিকে এগোতে শুরু করে। শনিবার বিদ্রোহীদের বড় একটি অংশ দামেস্ককে বিভিন্ন দিক দিয়ে ঘিরে ফেলে। এরপর থেকেই ছড়িয়ে পড়ে আসাদের দামেস্ক ছাড়ার গুঞ্জন।

২০১১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে প্রথম যে শহরটি বিদ্রোহে জ্বলে উঠেছিল, সেই হোমসকে বিপ্লবের রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গত দু’দিন ধরে বিদ্রোহীরা শহরটি পুনর্দখলের জন্য ব্যাপক অভিযান চালায়।

এই অভিযানের আগে সাধারণ সিরীয় জনগণের মধ্যে আসাদ সরকারের পতন নিয়ে তেমন কোনো আশা ছিল না। তবে সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া, রাশিয়ার সীমিত সহায়তা, ইরানের নিজস্ব সংকট এবং হিজবুল্লাহর মাধ্যমে দক্ষিণ লেবাননে ব্যস্ততা-এসবই বিদ্রোহীদের পক্ষে সুবিধা তৈরি করেছে।

এদিকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার বলেছেন, ‘সিরিয়ার দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি আমরা সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। সব পক্ষকে অবশ্যই বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।’