জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজার রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ তিনজনের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। রায়ের জন্য আজ দিন ধার্য রয়েছে। আপিলের ওপর মঙ্গলবার চতুর্থ দিনের মতো শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল খারিজ করে সাজা ১০ বছর বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ খালেদা জিয়া পৃথক দুটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন। গত বছরের ১১ নভেম্বর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল মঞ্জুর এবং সাজার রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় সাজার রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক আপিল করেন খালেদা জিয়া।
এছাড়া ১০ বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে সাবেক সংসদ-সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ গত বছর পৃথক আপিল করেন। খালেদা জিয়ার আপিলের ওপর ৭ জানুয়ারি শুনানি শুরু হয়। তৃতীয় দিনে ৯ জানুয়ারি খালেদা জিয়া ও শরফুদ্দিন আহমেদের আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ মঙ্গলবার শুনানির জন্য দিন রাখেন। এদিন কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলের ওপর শুনানি হয়। চতুর্থ দিনে পৃথক আপিলের ওপর শুনানি শেষে আদালত বলেন, আগামীকাল (বুধবার) রায়ের জন্য দিন রাখা হলো।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, এম বদরুদ্দোজা ও আইনজীবী কায়সার কামাল শুনানিতে অংশ নেন। খালেদা জিয়া ও শরফুদ্দিনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস শুনানি করেন। কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও অনীক আর হক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আসিফ হাসান। শুনানির সময় খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, জাকির হোসেন ভূঁইয়া ও মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এতিমদের সহায়তার উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে পাঠানো ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ জজ আদালত-৫ রায় দেন।
রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক সংসদ-সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।