গাজীপুরে মায়ের পরকিয়ায় বাঁধা দেওয়ায় ইঁদুরের বিষ খাওয়ায়ে ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত প্রেমিকসহ নিহতের মাকে রবিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মহানগরীর পূবাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সোলেমান হোসেন ওরফে সম্রাট (১৭) রাজধানীর উত্তরার আবদুল্লাহপুরে একটি অনলাইন সপে চাকরি করতেন। গ্রেফতারকৃত স্বপ্না খাতুন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার বাইগুনি গ্রামের আব্দুল হামিদ প্রামাণিকের মেয়ে এবং আমির আলী পূবাইল থানার সাতপোয়া এলাকার মো. জামির উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী জাকির হোসেনের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানার কুদাব এলাকায় আলাদা ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন দুই সন্তানের জননী স্বপ্না খাতুন। স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে স্থানীয় বাসিন্দা আমির আলীর সঙ্গে পরকিয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে স্বপ্নার। বিষয়টি তার বড় ছেলে সোলেমান হোসেনের নজরে আসলে সে বিভিন্নভাবে তাদের বাঁধা সৃষ্টি করে। বেশ কয়েকবার বাঁধা সৃষ্টি করায় সন্তানের উপর ক্ষুব্ধ হন স্বপ্না। একপর্যায়ে পথের কাঁটা দুর করতে নিজ সন্তানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্বপ্না। পরে শুক্রবার রাতে মায়ের (স্বপ্না) পরামর্শে সোলেমান হোসেনকে ফোন করে পূবাইলের করমতলা রেললাইনের পাশে ডেকে নেয় প্রেমিক আমির আলী। সেখানে কৌশলে গ্লাসের পানিতে ইঁদুরের ওষুধ মিশিয়ে সোলেমানকে খেতে দেয়। ইঁদুরের ওষুধ মিশ্রিত পানি পান করে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সোলেমান। পরে তার লাশ রেললাইনের পাশে সুলতানের মাছের খামারের পুকুরে ফেলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় আমির আলী।

জিএমপি’র পূবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরদিন শনিবার ওই পুকুরে সোলেমানের লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এঘটনায় নিহতের ফুফা টিপু সুলতান বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ নিহতের মা স্বপ্না খাতুন ও প্রেমিক আমির আলীকে গ্রেফতার করে। প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা পুরো হত্যার ঘটনা বর্ণনা করেন।

তিনি আরো জানান, রবিবার আদালতে তাদের পাঠানো হলে বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে গ্রেফতারকৃতরা। পরে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে তাদের।