নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৮ সালে সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার হিসেবে মাগুরা সদরে যোগদান করার পরই একের পর এক দ্বায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জনাব ঝুমুর সরকার। সপ্তাহে ৫ দিন অফিস করার নিয়ম থাকলেও তিনি অফিস করেন ২/৩ দিন।সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী বয়স্ক বিধবা,প্রতিবন্ধীভাতা,প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি,অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতা ও উপবৃত্তি সহ সব ধরনের ভাতা বাস্তবায়ন হয়ে থাকে ইউনিয়ন কমিটির (রেজুলেশনসহ) সুপারিশের ভিত্তিতে উপজেলা ভাতা বাস্তবায়ন কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনের পর। কিন্তু উক্ত অফিসার ২০১৮ সালে এ কার্যালয়ে যোগদানের পর নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়াল খুশি মতো ভাতা বাস্তবায়ন করেছেন।ভাতা বাস্তবায়নের সফটওয়্যারে নিজে কাজ না করে Management Information System (MIS) এ নিজের (অফিসারের) আইডি ও পাসওয়ার্ড কার্যালয়ের অফিস সহকারী মোঃ আশিকুল কায়েস এর কাছে রেখেছেন দীর্ঘদিন।অফিস সহকারী মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তার ইচ্ছামত বিভিন্ন ধরনের ভাতা করে থাকেন।ইচ্ছামত ভাতাভোগির মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করেন।ফলে ২০২২-২৩,২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মাগুরা সদর উপজেলার হাজার হাজার ভাতাভোগি তাদের ভাতার টাকা পাননি। অফিসারের আইডি ও পাসওয়ার্ড শেয়ার না করার ব্যাপারে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক বার বার পত্র জারি করা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট অফিসার তা অগ্রাহ্য করেছেন। ২০১৮-১৯ অর্থ বছর থেকে শুরু করে ২০১৯-২০,২০২০-২০২১,২০২১-২০২২,২০২২-২০২৩,২০২৩-২০২৪,২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিভিন্ন প্রকার ভাতার ইউনিয়ন কমিটি ও উপজেলা কমিটির অনুমোদনকৃত কোন তালিকা অফিসে নেই। এমনকি বিভিন্ন সময়ে মারা যাওয়া বিভিন্ন ভাতাভোগীর প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রেও করেছেন চরম অনিয়ম।ভাতা প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রেও কোন অনুমোদিত তালিকা সংশ্লিষ্ট অফিসে নেই। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সারা বাংলাদেশে ভাতাভোগিদের লাইভ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়।এ কার্যালয় এর ভাতাভোগিদের লাইফ ভেরিফিকেশন করা হলেও তা ছিল নিতান্তই লোক দেখানো। লাইভ ভেরিফিকেশনে অসংখ্য ভাতা ভোগী মৃত, নিরুদ্দেশ, অনুপস্থিত পাওয়া গেলেও নিয়ম অনুযায়ী তাদের প্রতিস্থাপন করা হয়নি। যার ফলে একদিকে যেমন হাজার হাজার মৃত,নিরুদ্দেশ ভাতা ভোগীদের মোবাইল একাউন্টে পেরোল প্রদান করে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয় করেছেন। অন্যদিকে অত্র উপজেলার হাজার হাজার বয়স্ক,বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতাপ্রত্যাশীদের প্রাপ্ত ভাতা থেকে বঞ্চিত করেছেন। অফিসে কোন ভাতাভোগী ভাতা সংক্রান্ত প্রশ্ন নিয়ে আসলে তাকে সরাসরি উপজেলা পোস্ট অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অসহায় ভাতাভোগিরা অনেক সময় পোস্ট অফিস থেকে তাদের প্রশ্নের সঠিক সমাধান না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়িতে ফেরেন। এছাড়াও প্রতিবছর অফিসের বিভিন্ন কোডে সরকারী অর্থ বরাদ্দ করা হলেও সে অর্থ বরাদ্দ অনুযায়ী সঠিকভাবে খরচ না করে ভুয়া বিল করে টাকা তুলে নেওয়া হয়।শুধুমাত্র ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে কম্পিউটার বাবদ ২৩৫০০০,যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাজি বাবদ ৩৮১০০০,আসবাবপত্র বাবদ ২৬৫০০০,অন্যান্য মনিহারি বাবদ ১৫৫০০০ টাকা এবং মহিলা অফিসার হয়ে অফিসের মোটরসাইকেল ব্যবহার না করেই এখাতের ৩২০০০ টাকা সহ সর্বমোট ১০ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দকপি ছাড়াই বিশেষ কৌশলে বরাদ্দ এনে ভুয়া বিল করে সব সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন ঐ কর্মকর্তা। যার একটা ৫০% অংশ পেয়েছেন অত্র জেলার উপপরিচালক জাকির হোসেন। তাকে এসব বিষয়ে বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বরং ঝুমুর সরকারকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সর্বদা চেষ্টা চালিয়েছেন।গত ১৫/১২/২০২৪ ইং তারিখে এই কর্মকর্তাকে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়,মাগুরা সদর হতে সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা) মাগুরাতে বদলী করা হয়। বদলীর আদেশে ২২/১২/২০২৪ তারিখের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তরপূর্বক বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি।বরং নানাবিধ তৎপরতা চালাচ্ছেন তার বদলির অর্ডার বাতিল করার জন্য। অত্র অফিসে নতুন কর্মকর্তা ২৯/১২/২০২৪ তারিখে যোগদান করলেও তার যোগদান গ্রহন করেননি উপপরিচালক জাকির হোসেন। বরং প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে নতুন যোগদান করা অফিসারকে অন্যত্র বদলীর নীল নকশা আকতে থাকেন এই জাকির হোসেন। ২৯/১২/২০২৪ হতে ১৩/০১/২০২৫ তারিখ পর্যন্ত মাগুরা সদরে অফিস করলেও তার যোগদান গ্রহন না করে তাকে অন্যত্র বদলী করা হয়।অন্যদিকে ঝুমুর সরকার কে পুনরায় সদরে আনার জন্য চেষ্টা চালাতে থাকেন।বদলীর আদেশে ২২ ডিসেম্বর স্ট্যান্ড রিলিজ এর কথা উল্লেখ থাকলেও উপপরিচালক জাকির হোসেন ঝুমুর সরকার কে অব্যহতি প্রদান না করে নিয়ম বহির্ভূত ছুটি প্রদান করেন।এবং ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে মাগুরা সদর কার্যালয়ে নতুন অফিসার যোগদান করলেও ৩১/১২/২০২৪ তারিখে সমাজসেবা অফিসার সদর মাগুরা হিসেবে স্বাক্ষরিত ঝুমুর সরকার এর ৭ দিনের ছুটির আবেদন উপপরিচালক জাকির হোসেন গ্রহণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ অগ্রাহ্য করেন।জাকির হোসেন একজন জেদি,বদরাগী ও একরোখা টাইপের । তিনি যেসব কর্মস্থলে চাকরি করেছেন সব জায়গায় তার বদনাম আছে। শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র, যশোরে চাকরি করা অবস্থায় শিশুদের সাথে প্রতিনিয়ত দূর্ব্যবহার ও অত্যাচার ও নির্যাতন করার জন্য শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের শিশুরা একসময় তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করে তাকে ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত করে।এরপর সে বদলী হয়ে আসে মুজিবনগর কমপ্লেক্স সরকারী শিশু পরিবার,মেহেরপুর। এখানে সব সহকর্মীর সাথে তার দ্বন্দ্ব ছিল।জেলার উপপরিচালকের সাথে তার হাতাহাতির ঘটনা সবাই জানতো। এরপর বদলি হয় এতিম ও প্রতিবন্ধী শিশুদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মাদারীপুর। সেখানে এক সহকারী পরিচালক এর সাথে তার দ্বন্দ্ব লেগে যায়।একপর্যায়ে ফেসবুকে জাকির হোসেন পোস্ট দেয় ” এডি কর্তৃক প্রাননাশের হুমকি “! এরপর বদলী হয়ে আসে মাগুরা জেলায়।এখানে এসে সমাজসেবা কার্যালয় কে নিজের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিনত করে।জেলার ২ জন অফিসার কে হাতে নিয়ে অন্যান্য সকল সহকর্মীর উপর ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে থাকে।ঘোষনা দেন নিজ জেলা মাগুরাতে এমন কোন পুরুষ অফিসার কে মাগুরা জেলায় চাকরি করতে দেবেন না। ইতোমধ্যে একজন অফিসার কে মাগুরা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছেন। বাকি আছেন ২ জন।জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জাহিদুল আলম ও রেজিষ্ট্রেশন অফিসার ওয়াসিম আকরাম। তাদেরকে মাগুরা জেলা থেকে বদলী করার জন্য ইতোমধ্যে প্রধান কার্যালয় আগারগাঁও এ সুপারিশ করেছেন এই জাকির হোসেন।২০১৪,২০১৮ ও ২০২৪ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন এই জাকির হোসেন । ভোট ডাকাতি ও ভোট চুরির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন। আওয়ামী সরকারকে খুশি করে ইতোমধ্যে সে দুইটা প্রমোশন হাতিয়ে নিয়েছেন।